মোটরযানের ফিটনেস পরীক্ষার জন্য সরকারি বা বেসরকারি মোটরযান মেরামত কারখানা নির্বাচনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। এ উদ্দেশ্যে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আবেদনপত্র দেওয়ার আহ্বান করা হয়েছে।
সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি জানিয়েছে বিআরটিএ।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট সব মেরামত কারখানার সড়ক পরিবহন বিধিমালা ২০২২-এর আলোকে বিআরটিএ প্রদত্ত নিবন্ধন সনদ থাকতে হবে। মোটরযানের ফিটনেস পরীক্ষার সিস্টেম সরবরাহ, স্থাপন ও পরিচালনায় অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। দেশি বা বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগের সুযোগও রয়েছে (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)। একটি ভেহিকল ইন্সপেকশন সেন্টার (ভিআইসি) স্থাপনের জন্য উপযুক্ত স্থানে ৫০-৬০ হাজার বর্গফুট জায়গা থাকতে হবে। একটি ভিআইসি পরিচালনায় ন্যূনতম ছয়জন কারিগরিকর্মী থাকতে হবে— যার মধ্যে অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপ্লোমাধারী দুইজন এবং ট্রেড কোর্সধারী দুইজন মেকানিক থাকতে হবে।
যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একজন বিএসসি অটোমোবাইল/মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ও একজন ডিপ্লোমাধারী কর্মী রাখতে হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে প্রতিদিন অন্তত ১০০টি মোটরযান পরীক্ষা করার সক্ষমতা থাকতে হবে।
ভিআইসি পরিচালনা সংশ্লিষ্ট সফটওয়্যার বিআরটিএর বিদ্যমান সফটওয়্যার সিস্টেমের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। বিনিয়োগযোগ্য আর্থিক সক্ষমতা (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), ভ্যাট নিবন্ধন, টিন, ট্রেড লাইসেন্স ও অডিট রিপোর্টসহ প্রয়োজনীয় নথিপত্র থাকতে হবে।
সরকার নির্ধারিত নীতিতে পরিবর্তন এলে তা স্বল্পসময়ে বাস্তবায়ন করার সক্ষমতা থাকতে হবে।
ফিটনেস পরীক্ষার জন্য আলাদা সেকশন, পরীক্ষা রিপোর্ট অনলাইনে সংরক্ষণ ও যাচাই-সুবিধা, প্রাথমিক চিকিৎসা, নিরাপত্তা ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকতে হবে। এছাড়া, কমপক্ষে পাঁচজন দক্ষ চালক, হেল্প ডেস্ক ও অভিযোগ নিষ্পত্তি ব্যবস্থা, শব্দ ও বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি, সিসি ক্যামেরায় পরীক্ষার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ, জরুরি মেরামতের ব্যবস্থা এবং পরিবেশ অধিদফতরের মানদণ্ড অনুযায়ী নিঃসরণ পরীক্ষার সুবিধা রাখতে হবে।
স্বয়ংক্রিয় ফিটনেসের আগে ম্যানুয়াল পরীক্ষার জন্য লেনের শুরুতে প্রয়োজনীয় স্পেস রাখতে হবে। নির্বাচিত প্রতিষ্ঠান নিজস্ব জায়গায় প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি স্থাপন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করবে।
বিআরটিএর পরিদর্শকরা এসব ভিআইসি ব্যবহার করে ফিটনেস সার্টিফিকেট ইস্যু করবেন। ভিআইসির ডিজিটাল সিস্টেম সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলবে এবং কোনো ধরনের ম্যানুয়াল হস্তক্ষেপের সুযোগ থাকবে না। ধাপে ধাপে টেস্ট রেজাল্ট তৈরি ও চূড়ান্ত রিপোর্ট স্বয়ংক্রিয়ভাবে জেনারেট হবে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জন্য ড্যাশবোর্ড ও কেন্দ্রীয় সিসিটিভি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাও থাকতে হবে।
ফিটনেস পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির মধ্যে রয়েছে— স্বয়ংক্রিয় চাকা সারিবদ্ধকরণ মেশিন, স্পিডোমিটার পরীক্ষক, ডিজেল ওপাসিমিটার, গ্যাস বিশ্লেষক, চ্যাসিস ডায়নামোমিটার, ডিটেক্টর চ্যানেল, স্বয়ংক্রিয় হেডলাইট পরীক্ষক, সাসপেনশন পরীক্ষক, সাইড স্লিপ টেস্টার, রোলার ব্রেক টেস্টার, এলইডি ডিসপ্লে বোর্ড, টেস্ট লেন কন্ট্রোল সিস্টেম ও সাউন্ড লেভেল মিটার।
আগ্রহী সরকারি বা বেসরকারি মোটরযান মেরামত কারখানাকে আগামী ২ ডিসেম্বর দুপুর ১২টার মধ্যে বিআরটিএ সদর কার্যালয় (নতুন বিমানবন্দর সড়ক, বনানী, ঢাকা–১২১২)-এ চেয়ারম্যানের বরাবর আবেদন দাখিল করতে হবে।
বিডি প্রতিদিন/কেএ