দখলবাজি ও চাঁদাবাজির অভিযোগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আওতাধীন যাত্রাবাড়ি থানা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি মুশফিকুর রহমান ফাহিমকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে জাতীয়তাবাদী যুবদল। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি।
শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-দফতর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূইয়া স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, ‘দখলবাজি ও চাঁদাবাজির অভিযোগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আওতাধীন যাত্রাবাড়ি থানা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি মুশফিকুর রহমান ফাহিমকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন ইতোমধ্যে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছেন।’
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে— ‘বহিষ্কৃতদের কোনো ধরনের অপকর্মের দায়দায়িত্ব দল নেবে না। যুবদলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তাদের সাথে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। ফাহিমের বিরুদ্ধে দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে বেআইনি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া মাত্রই কোনরূপ শৈথিল্য না দেখিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেয়ার উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়েছে।’
এর আগে, শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস পরিবহনের কোন বাস যাত্রাবাড়ী বাসস্ট্যান্ডে গেলেই ভাঙচুর করার অভিযোগ ওঠে মুশফিকুর রহমান ফাহিমের বিরুদ্ধে। এনিয়ে গত তিনদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন বাস কোম্পানির মালিক গ্রুপ ও শ্রমিক নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, নিজেকে যাত্রাবাড়ী থানার যুবদল নেতা দাবি করে ফাহিম নামের এক ব্যক্তি পাঁচ কোটি টাকা চাঁদা দাবিতে গাড়ি ভাঙচুর ও শ্রমিকদের মারপিট করেছে।
শরীয়তপুর জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারুক চকিদার বলেন, ‘যাত্রাবাড়ীতে যুবদলের কথিত নেতা ফাহিম শরীয়তপুরের সকল বাস থেকে চাঁদা চেয়েছে। এককালীন ৫ কোটি, নয়তো প্রতিমাসে ১০ লাখ। তিনদিন ধরে কোন বাস যাত্রাবাড়ী যেতে পারছে না, সেখান থেকে যাত্রী নিয়ে আসতেও পারছে না। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শরীয়তপুরের মানুষেরা।
এব্যাপারে প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বাস শ্রমিক বলেন, যাত্রাবাড়ীতে আমাদের শরীয়তপুর সুপার সার্ভিসের বাসিগাড়িতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কথিত নেতা ফাহিমের লোকজন হামলা করছে। এভাবে তিনদিনে আমাদের ২০-২৫টি বাস ভাঙচুর করেছে তারা। এতে বেশ কয়েক বাসচালক ও শ্রমিক আহত হয়েছেন।
এ নিয়ে শরীয়তপুর বাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. ফারুক তালুকদার বলেন, আমাদের বাস যাত্রাবাড়ী রাখা হতো, ওখানে ফাহিম নামের এক সাবেক যুবদল নেতা ৫ কোটি টাকার উপরে চাঁদা দাবি করেন। এই টাকা না দেওয়ার কারণে আমাদের বাস রাখতে বাধা প্রদান করে, ভাঙচুর চালায় ও হুমকি দেয়। তাই আমরা বাস যাত্রাবাড়ী যেতে পারছি না। এর ফলে শরীয়তপুর জেলার হাজার হাজার যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিষয়টি সমাধান হলে আমরা যাত্রাবাড়ী থেকে আবার বাস চালু করতে পারবো।
বিডি-প্রতিদিন/শআ