স্বরণকালের সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প দেখল নরসিংদী বাসী। তবে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল হলেও স্থানীয়দের মধ্যে এখনও আতঙ্ক কাটেনি। প্রতিনিয়ত উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে মানুষজন।
শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে নরসিংদীর মাধবদী ও পলাশ উপজেলায় শক্তিশালী ভূমিকম্পে কমপক্ষে বাবা-ছেলে সহ ৫ জনের মৃত্যু এবং শতাধিক লোক আহত হয়েছে। ঘোড়াশাল, মাধবদী ও পলাশ এলাকায় ঘরবাড়ি ফাটল ধরেছে, স্কুল, কলেজ ও বাজারের ছাদ-দেয়াল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ভয়াবহ কম্পনের সময় স্থানীয়রা আতঙ্কে দৌড়াদৌড়ি করেছেন। পলাশ রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের পাশে দোকানদার ফজলু মিয়া বলেন, ‘ভূমিকম্পের সময় হঠাৎ বিকট শব্দে মাটি কেঁপে উঠল। কিছুক্ষণের মধ্যে দেখলাম মাটিতে ফাটল ধরেছে। পুরো এলাকা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল।’
ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে আগুন লেগে ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এলাকার ছয়টি বাড়ি ও সাত তলা একটি শপিং মলে ফাটল ধরা পড়েছে। নরসিংদী শহরের নির্মাণাধীন ছয় তলা ভবনের দেয়াল ধসে এক তলা ভবনের ওপর পড়ে দুইজনের মৃত্যু ঘটে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. আ. স. ম. ওবায়দুলাহ নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি টিম ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ফাটল ধরা মাটির নমুনা সংগ্রহ করেছেন। প্রাথমিকভাবে ফাটল ধরা মাটির নমুনা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ভূমিকম্পের ধরন ও গভীরতা নির্ধারণ করা হবে।
নরসিংদী জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোসেন জানান, প্রতিটি উপজেলা ও পৌর প্রশাসককে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিহতদের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে, আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিনিয়ত উদ্বেগ আর আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটছে। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর মানুষ এখনও নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য সতর্ক অবস্থায় আছেন এবং ভবিষ্যতে আরও কম্পনের সম্ভাবনায় আতঙ্কিত।
বিডি-প্রতিদিন/আশফাক