কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে এক জেলের জালে ধরা পড়েছে বিরল প্রজাতির একটি 'পাফারফিশ' বা ফুগু মাছ। রবিবার সন্ধ্যায় মাছটি আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের একটি আড়তে আনা হলে এলাকাজুড়ে দেখা দেয় কৌতূহলের জোয়ার। মাছটির ওজন প্রায় সাড়ে তিন কেজি।
সারা শরীরে তিলের মতো ছোট ছোট দাগ ও কাঁটা থাকায় দেখতে অনেকটা শজারুর মতো হওয়ায় স্থানীয়রা একে ‘শজারু মাছ’ বা ‘তিলক পটকা’ বলেও চেনেন। তবে ভয়ংকর বিষাক্ত এই মাছ কেনার আগ্রহ দেখায়নি কেউ।
স্থানীয় জেলেরা জানান, এর আগে কখনো এমন মাছ দেখেননি তারা। শুক্রবার বঙ্গোপসাগরের শেষ বয়া এলাকায় জেলে বেল্লাল মাঝির জালে মাছটি ধরা পড়ে। ফুলে থাকা ও শরীরজুড়ে কাঁটা থাকায় প্রথমে অনেকেই ভয় পেয়ে যান।
আড়তে মাছটি নিয়ে আসেন ‘কামাল ফিস’-এর মালিক কামাল হোসেন। তিনি বলেন, 'এ ধরণের মাছ আমি আগে কখনও দেখিনি। এটি খাওয়ার যোগ্য কি না, তাও জানি না। অনেকে বলছেন এটি খুবই বিরল প্রজাতির মাছ।'
অচেনা এই মাছ দেখতে আলীপুর আড়তে ভিড় করেন বহু মানুষ। তবে শেষ পর্যন্ত জেলেরা মাছটি আড়তেই ফেলে রেখে যান।
ওয়ার্ল্ড ফিশ বাংলাদেশের গবেষণা সহকারী মো. বখতিয়ার রহমান জানান, এটি পাফারফিশ বা ফুগু নামেই পরিচিত। বাংলাদেশের উপকূলীয় ও গভীর সমুদ্রে মাঝে মাঝে এটি ধরা পড়ে।
তিনি বলেন, “মাছটির শরীরে ‘টেট্রোডোটক্সিন’ নামক বিষ থাকে, যা লিভার, ডিম্বাশয়, চামড়া ও অন্ত্রে বেশি পরিমাণে থাকে। সামান্য পরিমাণ খেলেও হতে পারে মারাত্মক শারীরিক সমস্যা, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত।”
বিশেষজ্ঞরা জানান, যথাযথভাবে প্রক্রিয়াজাত না করলে রান্নার পরও বিষ থেকে যায়, তাই সাধারণ মানুষের জন্য এই মাছ একেবারেই অনুপযুক্ত। তবে জাপানের মতো কিছু দেশে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শেফরা নির্দিষ্ট নিয়মে এই মাছ রান্না করে রেস্তোরাঁয় পরিবেশন করেন।
বিডি প্রতিদিন/মুসা