নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিচয় মিলেছে। নিহত আটজনের মধ্যে সাতজনই একই পরিবারের। তাদের সবার বাড়িই কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের ধর্মদহ গ্রামে। আত্মীয় এক রোগীকে দেখতে পরিবারের ৭ সদস্য সিরাজগঞ্জ যাচ্ছিলেন।
বুধবার সকাল ১০টার দিকে বড়াইগ্রাম উপজেলার তরমুজ পাম্প এলাকায় বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে মাইক্রোবাসটি নিয়ন্ত্রণ হারালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় মাইক্রোবাস চালকসহ আটজন নিহত হন।
একই পরিবারের নিহত সাতজন হলেন জাহিদুল ইসলাম (৫৫), সেলিনা খাতুন (৫০), রোউসনারা আক্তার ইতি (৪৮), আনোয়ারা খাতুন (৫৫), আনোয়ারা খাতুন আনু (৫০), আনজুমান(৬০) ও সীমা (৩৫)।
এছাড়াও নিহত মাইক্রোবাস চালকের নাম শাহাবুদ্দিন (৪২)। তিনিও একই গ্রামের জয়নাল আবেদিনের ছেলে।
নিহত জাহিদুল ইসলামের চাচাতো ভাই মানজারুল ইসলাম খোকন সবার নাম পরিচয় নিশ্চিত করে জানান, আমার চাচাতো ভাইয়ের দুই ছেলে প্রবাসে থাকেন। দুইদিন আগে এক ছেলের স্ত্রীর অপারেশন হয়েছে। তিনি কদিন আগে দেশে ফিরেছেন। তারা সিরাজগঞ্জে থাকেন। অসুস্থ ওই রোগীকে দেখতে যাওয়ার জন্য সকাল সাড়ে ৬টার দিকে একটি মাইক্রোবাস ভাড়া নিয়ে চাচাতো ভাই, ভাবিসহ পরিবারের ৭ জন সিরাজগঞ্জ যাচ্ছিলেন।
এ সময় পথিমধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় পরিবারের সাতজন ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। তাদের পরিবারে আর কেউ থাকলো না। নিহতদের মধ্যে জাহিদুলের স্ত্রী, বোন, শাশুড়ি ও শ্যালিকা রয়েছেন।
দুপুর তিনটার দিকে ধর্মদহ গ্রামে গিয়ে দেখা যায়,বাড়ির বাইরে প্রতিবেশীরা ভিড় করে আছেন। আত্মীয়-স্বজনরা বাড়ির অন্যদের শান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
এদিকে একই পরিবারের ৫ জনসহ ৮ জনের মৃত্যুতে এলাকাতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দুপুর থেকে ধর্মদহ গ্রামের বাড়িতে ভিড় জমান এলাকার মানুষ
তারা বলছেন, এমন মৃত্যু এই গ্রামে আগে কখনই দেখেননি তারা। সকলে চোখেমুখে হতাশার ছাপ। লাশের অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন তারা। নিহত জাহিদুল ইসলামের দুই ছেলে সোহান ও সাগর প্রবাসে রয়েছে। তারা আসার পর লাশের দাফন সম্পন্ন হবে বলে জানান নিহতের স্বজনরা।
দৗেলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) সোলায়মান শেখ জানান, নিহতদের সবার বাড়ি ধর্মদহ গ্রামে বলে জানতে পেরেছি। স্থানীয় ক্যাম্প পুলিশকে ওই বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএ