লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় রেহেনা খাতুন (৭) নামে এক শিশুকে শারীরিক নির্যাতন করার পর অ্যাসিডে শরীরের কিছু অংশ পুড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সৎ মা শাবানা বেগম কোহিনুরকে আটক করেছে পুলিশ। গুরুতর আহত ওই শিশুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ওই শিশুর বাবা রবিউল ইসলাম বলেন, আমার মেয়েকে তার সৎ মা শরীরের বিভিন্ন স্থানে কামড় দিয়েছে। সামনের অংশে অ্যাসিড দিয়ে পুড়ে দিয়েছে। গোটা শরীরে কামড়ের দাগ রয়েছে। আমি গাড়ি চালাই, কিছুক্ষণের জন্য বাড়িতে আসি। ঘুমিয়ে আবারো সকালে চলে যাই। কিন্তু তার সৎ মা আমার বাচ্চাটাকে এভাবে নির্যাতন করেছে, আমি সহ্য করতে পারছি না।
মঙ্গলবার রাতে উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের রমণীগঞ্জ এলাকার নিজ বাড়ি থেকে তাকে আটক করে পুলিশ। আটক সাবানা বেগম কোহিনুর উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের রমণীগঞ্জ এলাকার ট্রাক চালক রবিউল ইসলামের স্ত্রী।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, দুই বছর আগে শিশু রেহেনা খাতুনের মা সম্পর্কের বিচ্ছেদ নিয়ে চলে যায়। আর সেই কারণে ট্রাক চালক রবিউল ইসলাম সাবানা বেগম কোহিনুরকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। শিশু রেহেনা খাতুন তার সৎ মাসহ নিজ বাড়েতে থাকতেন। শিশুটির বাবা রবিউল ইসলাম পেশায় ট্রাক চালক হওয়ায় বেশিরভাগ সময় বাড়ির বাইরে থাকেন। আর সেই সুযোগে শিশুকে নানাভাবে নির্যাতন করেন সৎ মা শাবানা বেগম।
মঙ্গলবার রাতে ঠুনকো অজুহাতে শিশুটিকে নির্যাতন করেন তার সৎ মা। শিশুটির কান্না শুনে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। এরপর পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রথমে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পরে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় সৎ মা শাবানা বেগমকে আটক করে পুলিশ।
হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, একটি শিশু নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। শরীরের একটি অংশ অ্যাসিডে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছি। যেহেতু দীর্ঘদিন থেকে সে অসুস্থ, তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছি।
হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুন নবী বলেন, এ ঘটনায় সৎ মাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই