বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলা সদরের রায়েন্দা। এখানকার ২ শতাধিক পরিবার প্রায় সারা বছরই থাকে পানিবন্দি। বর্ষা মৌসুম শেষ হয়েছে দুই মাস আগে। এখনো এলাকার পুকুর, ডোবানালা পানিতে একাকার। হাঁটুপানি জমে আছে অনেকের বাগান, বাড়ির আঙিনা ও উঠানে। এ অবস্থার জন্য পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকাকে দায়ী করছেন ভুক্তভোগীরা। বাড়ির উঠানে সাঁকো বানিয়ে চলাচল করছেন অনেকে। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক কাজকর্ম। দীর্ঘদিন জমে থাকা পানি পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এ পানি মাড়িয়ে চলাচল ও ব্যবহারের ফলে ঘরে ঘরে দেখা দিয়েছে চর্মরোগ। রায়েন্দা শহরতলির উত্তর কদমতলার আর কে ডি এস বালিকা বিদ্যালয়, পুরাতন পোস্ট অফিস ও রায়েন্দা বাজার দাখিল মাদরাসা এলাকায় দেখা গেছে জলাবদ্ধতার ভয়াবহ চিত্র। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় নিম্ন আয়ের মানুষ উঠান ও পুকুরের বদ্ধ পানি দিয়ে করছে ধোয়ামোছা, গোসলসহ দৈনন্দিন কাজ। সবখানে পানি জমে থাকায় বেড়েছে মশামাছির উপদ্রব।
সরেজিমন দেখা যায়, এলাকার প্রায় প্রতিটি বাড়ির উঠানে হাঁটুপানি। দীর্ঘদিন জমে থাকায় বিবর্ণ হয়ে গেছে পানির রং। বাসায় ভেসে আসছে দুর্গন্ধ। সেতারা বেগম (৫০) নামে এক নারীকে দেখা গেছে ঘরের সামনে সেই পচা পানি দিয়ে থালাবাসন ধুইছেন। তিনি বলেন, ‘পুকুর আর উঠানে একই পানি। ফলে এই পানি দিয়াই ধোয়াপালা করি। আর কোনো উপায় নাই। এই দুর্ভোগ যে কবে যাবে কেডা জানে।’ এলাকার জব্বার শিকদার ও সালাম হাওলাদার বলেন, ‘সব দিকে পচা পানি। বাড়ির স্বাভাবিক কাজকর্ম করার উপায় নাই। পচা গন্ধে শ্বাস নেওয়া যায় না। কাপড়চোপড় ধোয়া, গোসলসহ সব এই পচা পানি দিয়াই করতে হয়।’ রায়েন্দা সরকারি পাইলট হাইস্কুলের শিক্ষক ওমর ফারুক বলেন, ‘আমার পাঁচ বছরের মেয়ের পুরো শরীরে চুলকানি হয়েছে। ফোসকা পড়ে গেছে। ঘরে ঘরে শিশু-বয়স্করা চুলকানি ও চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছে।’ শরণখোলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রিয় গোপাল বিশ্বাস বলেন, ‘নোংরা পচা পানি দিয়ে গোসল এবং বাহ্যিক কাজ করলে শরীরে নানান রোগ, চামড়ার প্রদাহ এবং নারীদের প্রস্রাবে ইনফেকশন হওয়ার ঝুঁকি থাকে। ইউএনও সুদীপ্ত কুমার সিংহ বলেন, ওই এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন্য কয়েকবার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিছু লোক জমি ছাড়তে রাজি হয়নি।