সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকলেই দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি স্থিতিশীল থাকে। তিনি বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় এসে দেশে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছি, ব্যবসার সব বাধা দূর করেছি, দেশীয় উদ্যোক্তাদের প্রণোদনা দিয়েছি এবং বিদেশি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করেছি।’
রবিবার (২ নভেম্বর) রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের বর্তমান সংকট ও পুনরুদ্ধারের পথ’ শীর্ষক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে বাংলাদেশ গার্মেন্ট বায়িং হাউস অ্যাসোসিয়েশন (বিজিবিএ)।
স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ প্রসঙ্গে আমীর খসরু বলেন, ‘এলডিসি থেকে গ্র্যাজুয়েশনের আগে আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। আগে ক্যাপাসিটি বিল্ড আপ হবে, তারপরই টেকসইভাবে এলডিসি থেকে উত্তরণ সম্ভব।’
তিনি আরও বলেন, “ব্যবসার জন্য জরুরি হচ্ছে ‘ফিল গুড ফ্যাক্টর’। বিএনপি যতবারই ক্ষমতায় এসেছে ব্যবসার ক্ষেত্রে ‘ফিল গুড ফ্যাক্টর’ দিয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা যদি দেখেন স্থিতিশীলতা নেই, বিনিয়োগের উপযোগী পরিবেশ নেই, তখন তারা স্বাভাবিকভাবেই আগ্রহী হবেন না।”
তিনি বলেন, ‘বিএনপির স্লোগান অর্থনীতির গণতান্ত্রয়ন। অর্থনীতিতে যদি গণতন্ত্র না থাকে, একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ থাকে কারো হাতে সে ক্ষেত্রে অর্থনীতি বিকশিত হবে না। মনে রাখবেন, অর্থনীতিতে যত নিয়ন্ত্রণ আরোপ করবেন, তত বেশি দুর্নীতি হবে।’
আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশ ওভার রেগুলেডেট কান্ট্রি। এতে অসুবিধা ব্যবসায়ীদের। আর সুবিধা হচ্ছে চোরদের। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ভিয়েতনাম কেন অর্থনীতিতে আমাদের ছাড়িয়ে গেল। তারা ডিরেগুলেট করেছে।
২০২৬ সালে বাংলাদেশের এলডিসি থেকে গ্র্যাজুয়েশনের কথা রয়েছে। এ বিষয়ে আমীর খসরু বলেন, ‘আমাদের মৌলিক বিষয়গুলো এখনো সুরাহা হয়নি। আমাদের দেশে গণতন্ত্র উত্তরণ হয়নি। ১৫ মাস ধরে অনির্বাচিত সরকার, এখনো আমরা ঝুলে আছি। এই সরকার যে সব কিছু খারাপ করছে, তা বলছি না। তবে সরকারের কোনো দায়বদ্ধতা নেই, জনগণের কাছে জবাবদিহি নেই। এ কারণে দেশের অর্থনৈতিক খাতে কোনো শৃঙ্খলা নেই।’
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘দেশে কোনো শেয়ারবাজার আছে? দেশে ব্যবসার কোনো পলিসি আছে? ব্যাংকিং সেক্টরে কোনো স্থিতিশীলতা আছে? এমতাবস্থায় এলডিসি উত্তরণ করে কী লাভ? আমাদের অবস্থান ক্লিয়ার, আমরা আগে ক্যাপাসিটি বিল্ড আপ করব। তারপর এলডিসি নিয়ে ভাবনা।’
বিজিবিএ প্রেসিডেন্ট মোফাজ্জল হোসেন পাভেলের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট শওকত আজিজ রাসেল, বিজিএমইএর পরিচালক ফয়সাল সামাদ, জেএফকে ফ্যাশনসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর কফিল উদ্দিন, বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক শোভন ইসলাম, বিকিএমইএর ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রাশেদ, বিকিএমইএর পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন, অর্থনীতিবিদ এমএস সিদ্দিক, বিজিবিএর ভাইস প্রেসিডেন্ট সাইফুর রহমান ফরহাদ, সেক্রেটারি জেনারেল জাকির হোসেন প্রমুখ।
বিডি প্রতিদিন/মুসা