লালমনিরহাটে চলতি মৌসুমে টিএসপি, ইউরিয়া, ডিএপিসহ বিভিন্ন সারের দাম বেশি রাখার অভিযোগ উঠেছে ডিলার ও খুচরা বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে। বিশেষ করে টিএসপি সার বাজার থেকে উধাও হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। কৃষকদের অভিযোগ, জেলার কতিপয় অসাধু ডিলার টিএসপি সার সংকট সৃষ্টি করার লক্ষ্যে গোপন স্থানে গোডাউনে মজুদ করেছে। ডিলার ও খুচরা দোকানগুলোতে গেলে বলা হচ্ছে, টিএসসি সার নেই। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, ডিলারদের কাছ থেকে সার বেশি দামে কিনেছি। তাই বিক্রি করতে হচ্ছে বেশি দামে। লালমনিরহাট কৃষি বিভাগ জানায়, জেলার বিসিআইসির ৫২ ও বিএডিসির ৯২ ডিলারকে নির্দিষ্ট সময়ে সার বরাদ্দ দেওয়া হয়। টিএসপি সারের সরকার নির্ধারিত মূল্য প্রতি বস্তা ১৩৫০ টাকা এবং প্রতি কেজি ২৭ টাকা। লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, পাটগ্রাম, কালীগঞ্জ উপজেলায় কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি বস্তা সারের মূল্য নেওয়া হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা। বিশেষ করে আদিতমারী উপজেলায় নেওয়া হচ্ছে ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত। প্রতি কেজি নেওয়া হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ডিএপি সার সরকারের নির্ধারিত মূল্য প্রতি বস্তা ১০৫০ টাকা, প্রতি কেজি ২১ টাকা, ইউরিয়া সার বস্তা ১৩৫০ টাকা, প্রতি কেজি ২৭ টাকা এবং এমওপি বস্তা ১০০০ টাকা, প্রতি কেজি ২০ টাকা। চাষি মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, সার থাকতেও দিচ্ছে না। টিএসপি সার দোকানদাররা আমাদের কাছ থেকে নিচ্ছে ১৬০০ থেকে ১৭০০ টাকা। সরকার নির্ধারিত মূল্যে সার পাওয়া যাচ্ছে না। দোকানদারের কাছ থেকে নিতে হয় চড়া দামে। এতে খরচ হয় অনেক বেশি। ফসল আবাদ করা মুশকিল হয়ে গেছে। কৃষকরা জানান, টিএসপি, ইউরিয়া, পটাশ, ফসপেট সব সারের দাম বেশি চাচ্ছে। টিএসপি প্রতি বস্তায় ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা বেশি নিচ্ছে। যদিও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, সার সংকট নেই। বাফার গোডাউনে এখনো যথেষ্ট সার মজুদ রয়েছে। খরিপ-টু মৌসুমে ৮৬, ৬৫০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ৮৫, ৩৫০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ চলমান। চলতি অর্থবছরে জেলায় ইউরিয়া ৬৮৯৩২, টিএসপি ৩০২১০, ডিএপি ৪৫৩২০, এমওপি ৪৯৬১৬ মেট্রিক টনের চাহিদা পাঠানো হয় মন্ত্রণালয়ে। এ পর্যন্ত ইউরিয়া ৩৯, ৬৯০, টিএসপি ১২, ৭০২, এমওপি ১৫, ৮৫৩, ডিএপি ২৩, ৫১১ টন বরাদ্দ পাওয়া গেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. সাইখুল আরেফিন জানান, আমাদের সারের অভাব নাই। পর্যাপ্ত সার সরবরাহ রয়েছে। দাম বেশি বা সারের অভাবের অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।