বগুড়ায় টানা বৃষ্টিতে মাঠেই নষ্ট হচ্ছে কাটা ধান। আবার জেলায় কোনো কোনো জায়গায় বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে ধান খেত। ধানের বড় অংশ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন চাষিরা। এমনকি কেটে আনা ধান মাড়াই করতে না পারায় সেগুলোতে চারা গজাতে শুরু করেছে। গবাদি পশুর অন্যতম খাবার ধানের খড়। বৃষ্টির কারণে খড় শুকাতে না পারায় সংকট হতে পারে গোখাদ্যের।
জানা যায়, বগুড়ায় এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে হওয়া বৃষ্টিতে কিছু এলাকায় মাঠের ধান তলিয়ে গেছে। কাটা ধান বাড়িতে আনতে না পারায় পচে যাচ্ছে মাঠেই। অনেকে কাটা ধান জমির অ্যাইলে পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে রেখেছেন। কেউ কেউ স্বপ্নের ফসল স্তূপ করে রেখেছেন রাস্তার পাশে। ধান শুকনো রাখতে তালপাতা, বস্তার তৈরি চটি বা তেরপাল ব্যবহার করেছেন অনেকে। কোনো কোনো কৃষক ধান মাড়াই করেছেন কিন্তু শুকাতে পারছেন না। এই সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছেন দিনমজুররা। তারা ধান কাটা-মাড়াইয়ের জন্য পারিশ্রমিক বেশি চাচ্ছেন। ফলে আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষক।
সারিয়াকান্দি উপজেলার চাষি আবদুল হামিদ জানান, বৃষ্টির কারণে এখনো চার বিঘা জমির ধান কাটতে পারিনি। পানিতে তলিয়ে গেছে। কিছু জমির ধান কেটে আইলে রেখেছি। সেগুলোও পচে যাচ্ছে। কাটা ধান মাড়াই করতে না পারলে নষ্ট হয়ে যাবে। ধান শুকানো ছাড়া বিক্রি বা সিদ্ধ কোনোটাই সম্ভব হবে না। মনে হচ্ছে ধানে দুই-তিন দিনের মধ্যে চারা গজাবে। তখন এ চালের ভাত খাওয়া যাবে না। দুর্গন্ধ ছড়াবে। আদমদীঘি উপজেলার কৃষক তরিকুল ইসলাম আকন্দ জানান, জমির বোরো ধান কাটার পর বাড়িতে আনার আগেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আমার প্রায় ১০ বিঘার ধান ও গোখাদ্য (খড়) পচে গেছে। মনে হচ্ছে এবার চাল কিনে খেতে হবে। প্রতিবছর আমি ধান ও চাল বিক্রি করে অনেক মুনাফা ঘরে তুলি। এ বছর বৃষ্টিতে মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। গরুর খাদ্য ও চাল কেনা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কর্মকর্তা ফরিদুর রহমান ফরিদ জানান, এ বছর ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। দাম বেশি পাওয়ায় খুশি কৃষক। অনেক জমিতে দেরিতে ধান আবাদ হয়েছে। সেসব জমির ধান এখনো ওঠেনি। কয়েক দিন ধরে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে। আবহাওয়া ভালো না হলে ক্ষতির মুখে পড়বেন চাষিরা। অতিবৃষ্টিতে গোখাদ্য পচে যাওয়ার খবরও আসছে।