রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার পর আশপাশ থেকে ছুটে এসেছিলেন অনেকে। প্রতিষ্ঠানটির অনেক শিক্ষার্থীও বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনা দেখে। কয়েকজন সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছে। তাদের মধ্যে কেউ জানায়, বিমানটি স্কুলের দোতলা ভবনের প্রবেশমুখে বিধ্বস্ত হয়, সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায়। আবার কেউ বলছে, বিমানটি মাঠের ওপরে আছড়ে পড়ে। এরপর ভবনে ধাক্কা খায়, সঙ্গে সঙ্গে আগুন লেগে যায়। ভয়াল আগুনের কারণে তারা শুরুতে কাউকে উদ্ধার করতে পারেননি। মাইলস্টোন কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সবুজ মিয়া জানান, বিমানটি স্কুলের দোতলা ভবনের প্রবেশমুখে বিধ্বস্ত হয়। স্কুল ছুটির সময় হওয়ায় কিছু শিক্ষার্থী ইতোমধ্যেই বের হয়ে গিয়েছিল, তবে অনেকে তখনো ভবনের ভিতরেই ছিল। বিধ্বস্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আগুন ধরে যায় এবং ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যেতে থাকে চারদিক। প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহ বুলবুল জানান, বিমানটি একটি একাডেমিক ভবনের গেটে ধাক্কা খায়, যেখানে প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস চলছিল। জহিরুল নামে একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে, উড়োজাহাজটা মাঠের মাঝখানে আছড়ে পড়ে। তার পর ছেচড়ে ভবনে গিয়ে ধাক্কা খায়। সেখানেই আগুন ধরে যায়।’ মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজের এক শিক্ষার্থী বলে, ‘প্রাইমারি (প্রাথমিক)
সেকশনের ভবনে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। বিস্ফোরণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আশপাশের দেয়াল ভেঙে যায়। যেখানে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে সেটিতে মূলত প্রাইমারির ক্লাস হতো।’
বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘বিমানটি মাঠের সামনে দিয়ে আসার পরপর পেছন থেকে ভবনে ঢুকে যায়। আমরা পাশেই কাজ করছিলাম, আওয়াজ শুনে দৌড়ে এসে দেখি আগুন জ্বলছে।’ ভিতরে আটকে পড়া শিক্ষার্থীরা অনেকে জানালা দিয়ে বের হয়ে আসার চেষ্টা করেছিল জানিয়ে এই প্রত্যক্ষদর্শী জানান, কেউ কেউ দরজা দিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু আগুনের কারণে অনেকে বের হতে পারেনি।
একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী কাওসার বলেন, ‘একটা ফাইটার প্লেন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আমাদের জুনিয়র ক্যাম্পাস- এখানে ক্লাস ফাইভ থেকে এইটের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করে, ঠিক সেখানে প্লেনটা পড়ে। আমাদের ছোট ভাইয়েরা ছিল, ওইখানে বলতে গেলে সবাই পুড়ে গেছে, সবাই ঝলসে গেছে। আমরা ভিতরে গিয়েছিলাম, আগুনের কারণে কাউকে বের করতে পারিনি। খুব খারাপ অবস্থা।’