কুমিল্লায় ঈদবাজারে চাহিদার শীর্ষে রয়েছে খাদির পাঞ্জাবি ও থ্রি-পিস। এ ছাড়া ফতুয়া, শাড়ি, বিছানা চাদর ও বালিশের কভারও ভালো বিক্রি হচ্ছে। ঐতিহ্য আর আধুনিক ডিজাইনে খাদির কাপড় মন কেড়েছে ভোক্তার। বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়লেও বাড়েনি খাদি পোশাকের দাম। কাপড়ের মান ভালো এবং রং পাকা হওয়ায় ক্রেতারা খাদিতে ঝুঁকছেন। কুমিল্লার খাদির পোশাকের সুখ্যাতি দেশজুড়ে। বর্তমানে কুমিল্লা শহরে খাদির নাম সংযুক্ত দোকান আছে ৪ শতাধিক। নগরীর রাজগঞ্জ বাজারের পশ্চিম দিক থেকে কান্দিরপাড়ের রামঘাটলা পর্যন্ত এসব দোকানের অবস্থান। খাদির কাপড় বিচ্ছিন্নভাবে যাচ্ছে আমেরিকা, ইংল্যান্ড, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে। জেলায় দেড় হাজার পরিবার এ পেশায় জড়িত। খাদি কাপড় বিক্রির রয়েছে আলাদা মার্কেট।
বিক্রেতারা জানান, খাদির প্রতিটি পাঞ্জাবি ৪০০-১৪০০, শার্ট ৬০০-৭০০, থ্রি-পিস ৬০০-১৮০০ এবং শাড়ি ৭৫০-১৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সাংস্কৃতিক সংগঠক জহিরুল হক দুলাল বলেন, খাদির গোড়াপত্তন হয়েছে ১০০ বছরেরও বেশি সময় আগে। বিশ্বেই কুমিল্লার শাড়ি ও খাদি কাপড়ের নামডাক ছিল। স্বদেশি আন্দোলনের সময় মহাত্মা গান্ধী বিদেশি পণ্য বয়কটের ডাক দেন। মোটা কাপড়, মোটা ভাত-সর্বত্র এমন আওয়াজ ওঠে। স্বদেশি আন্দোলনের পর খাদি কাপড়ের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে ওঠে। বড় বড় নেতা খাদির পায়জামা, চাদর, পাঞ্জাবি পরে গৌরববোধ করতেন। খাদি কুমিল্লাকে ব্র্যান্ডিং করে।
তানজিনা ইসলাম নামে একজন এসেছেন বাবার জন্য খাদির পাঞ্জাবি কিনতে। তিনি বলেন, খাদির কাপড়ের রং পাকা। কম দামে টেকসই পোশাক। ময়নামতি থেকে পরিবার নিয়ে আসা গিয়াস উদ্দিন বলেন, ঈদ উৎসবে খাদির পোশাকে শেকড়ের টান অনুভব করি। এবার নিজের জন্য পাঞ্জাবি আর পরিবারের জন্য থ্রি-পিস কিনেছি। খাদিঘরের স্বত্বাধিকারী প্রদীপ কুমার রাহা বলেন, খাদি পোশাকের মানে কোনো আপস করি না। তাই কাপড়ের রং থাকে পাকা। দামেও সাশ্রয়ী। বর্তমানে খাদি শিল্পে অনেক নতুন ডিজাইন এসেছে। দাদা, বাবা-ছেলে ও নাতি মিলে আমরা চার প্রজন্মের চাহিদা মিটিয়ে আসছি।