সাবেক সেনাপ্রধান অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল ইকবাল করিম ভূইয়া বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আরও এক থেকে দুই বছর ক্ষমতায় থাকবে। এরপর নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আরোহণ করলেও ভারতের কৌশলগত অবস্থানের ওপর নির্ভর করবে তাদের টিকে থাকা। বিএনপি যদি আওয়ামী লীগের আন্দোলন দমন করতে ব্যর্থ হয় তবে ফের ফিরতে পারে ১/১১ সরকার। ‘আগামী পাঁচ বছরে আমরা কোথায় যাচ্ছি’ এই শিরোনামে নিজের ফেসবুকে ধারাবাহিক মন্তব্য তুলে ধরেন তিনি। কয়েকটি পর্বে এই মন্তব্যে সাবেক সেনাপ্রধান দেশের রাজনৈতিক বিভিন্ন বিষয় ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি নিজের মন্তব্য সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন, এই বিশ্লেষণ রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান কিংবা বিভিন্ন মতাদর্শের সঙ্গে নাও সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে পারে- এটিই গণতান্ত্রিক সমাজে স্বাভাবিক বিষয়। তবু আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি বিষয়টি পেশাদারি নিরপেক্ষতা ও বাস্তব মূল্যায়নের আলোকে উপস্থাপন করতে। এখানে ব্যক্তিগত বিশ্বাস, দলীয় আনুগত্য বা রাজনৈতিক পক্ষপাতের কোনো প্রভাব নেই; শুধু ঘটনার যৌক্তিক বিশ্লেষণই এই লেখার মূল ভিত্তি।
তিনি সর্বশেষ তার স্ট্যাটাসে তুলে ধরেন-
(১) বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আরও ১-২ বছর থাকবে। তারপর নির্বাচনে বিএনপির ক্ষমতা আরোহণের সম্ভাবনা। বিএনপি পুরো মেয়াদ শেষ করতে পারবে কি না তা নির্ভর করবে কিছুটা ভারতের কৌশলগত অবস্থানের ওপর এবং কিছুটা আওয়ামী লীগের প্রত্যাবর্তন ও শক্তি সঞ্চয়ের ওপর। যদি বিএনপি তার বিরুদ্ধে পরিচালিত পরিকল্পিত সহিংসতা-বিরোধী আন্দোলন দমনে ব্যর্থ হয় তবে ১/১১-এর পুনরাবৃত্তি ঘটবে।
(২) অদক্ষতা/আইনশৃঙ্খলা অবনতির কারণে অথবা ছাত্র চাপের মুখে সংস্কার-মিশনে হাত দিলে, নির্বাচন না হয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় থাকবে। তখন দুর্বল মন্ত্রীরা বদলাবে এবং ড. ইউনূসকে প্রেসিডেন্ট করে ঐকমত্যের জাতীয় সরকার গঠিত হবে। (৩) সংবিধান বদলের ক্ষীণ গুঞ্জন উচ্চকিত হলেও আগামী পাঁচ বছর যাবে গণপরিষদের নির্বাচন, সংবিধান প্রণয়ন ও গণভোটে। যাই ঘটুক, এই পাঁচটি বছর দেশকে বাস করতে হবে বিভ্রান্তি, অস্থিরতা, প্রতিবাদ, আন্দোলন, হরতাল-অবরোধ, সহিংসতার ভিতর দিয়ে। পঙ্গু অর্থনীতি দরিদ্রদের আরও বিপদে ফেলবে এবং সামাজিক-অর্থনৈতিক সূচকে বাংলাদেশ ক্রমাগত পেছাতে থাকবে।