অবশেষে প্রথমবারের মত নিজস্ব নিয়োগবিধি পেল রেজিস্ট্রেশন ডিপার্টমেন্টে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ বিষয়ে সোমবার নিবন্ধন অধিদপ্তরের (কর্মকর্তা ও কর্মচারী) নিয়োগ বিধিমালা-২০২৫ নামে গেজেট প্রকাশ করেছে আইন মন্ত্রণালয়।
এর মাধ্যমে দেশ স্বাধীনের ৫৪ বছরসহ রেজিস্ট্রেশন ডিপার্টমেন্টের দীর্ঘ ইতিহাসে বড় একটি সাফল্যের পালক যুক্ত হলো, যা বছরের পর বছর প্রত্যাশা করে আসছিলেন এ অধিদপ্তরের আওতাভুক্ত বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী। নিরসন হবে নানা জটিলতার। সাব-রেজিস্ট্রাররা পদোন্নতি পাবেন একেবারে শীর্ষপদ আইজিআর পর্যন্ত। যা বছরের পর বছর প্রত্যাশা করে আসছিলেন এ অধিদপ্তরের আওতাভুক্ত বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী।
প্রজ্ঞাপন বলা হয়েছে, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ (২০১৮ সনের ৫৭ নং আইন) এর ধারা ৫৯ এর উপ-ধারা (১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার সংবিধানের ১৪০(২) অনুচ্ছেদের বিধান মোতাবেক, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সঙ্গে পরামর্শক্রমে, নিম্নরূপ বিধিমালা প্রণয়ন করল।
তা হলো- ১। শিরোনাম- এ বিধিমালা নিবন্ধন অধিদপ্তর (কর্মকর্তা ও কর্মচারী) নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫ নামে অভিহিত হইবে।
২। সংজ্ঞা- বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এ বিধিমালায়-
(ক) ‘কমিশন’ অর্থ বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন।
(খ) ‘জিপিএ’ অর্থ Grade Point Average (GPA)।
(গ) ‘তফশিল’ অর্থ এই বিধিমালার কোনো তফশিল।
(ঘ) ‘নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ’ অর্থ সরকার বা সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা।
(ঙ) ‘পদ’ অর্থ তফশিলে উল্লিখিত কোনো পদ।
(চ) ‘প্রয়োজনীয় যোগ্যতা’ অর্থ সংশ্লিষ্ট পদের জন্য তফসিলে উল্লিখিত যোগ্যতা।
(ছ) ‘শিক্ষানবিশ’ অর্থ কোনো পদে শিক্ষানবিশ হিসাবে নিযুক্ত কোনো ব্যক্তি।
(জ) ‘সিজিপিএ’ অর্থ Cumulative Grade Point Average (CGPA); এবং
(ঝ) ‘স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়’ বা ‘স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান’ বা ‘স্বীকৃত বোর্ড’ অর্থ আপাতত বলবৎ কোনো আইন দ্বারা বা আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত কোনো বিশ্ববিদ্যালয়, প্রতিষ্ঠান বা বোর্ড এবং এ বিধিমালার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কমিশনের সঙ্গে পরামর্শক্রমে, সরকার কর্তৃক অনুমোদিত বলিয়া ঘোষিত অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়, প্রতিষ্ঠান বা বোর্ড।
এদিকে এ বিধিমালা জারির ফলে সাবরেজিস্ট্রারদের পেশাগত মর্যাদা বৃদ্ধি ছাড়াও পদোন্নতির নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো। নিবন্ধন অধিদপ্তরের শীর্ষ পদ (আইজিআর) পর্যন্ত পদোন্নতি পেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের সুযোগ নিশ্চিত হলো। নতুন করে অ্যাডিশনাল আইজিআর এবং ডিআইজিআর পদও সৃষ্টি হচ্ছে। আইআরও/এআইজিআর পদ বেড়ে ১৭টি হয়েছে। এছাড়া বিধিমালার মধ্যে প্রতিটি পদের সরাসরি নিয়োগ ও পদোন্নতির বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া আছে।
ব্রিটিশ আমলে ১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রদানের দালিলিক প্রথা চালু হয়। মূলত তখন থেকে এক ধরনের রেজিস্ট্রেশন প্রথা শুরু হয়। এরপর ১৯০৮ সালে এসে রেজিস্ট্রেশন আইন প্রবর্তন হয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৯ সালে দ্য গেজেটেড অফিসার্স (রেজিস্ট্রেশন ডিপার্টমেন্ট) রিক্রুটমেন্ট রুলস প্রণয়ন করা হয়, যা সংশোধন করা হয় ১৯৯৬ সালে। এভাবে চলে আসছিল। কিন্তু এ বিভাগের জন্য নিজস্ব নিয়োগবিধি প্রণয়ন নিয়ে দীর্ঘদিনের দাবি থাকলেও সেটি নানা কারণে বাস্তবায়ন হয়নি। অনেক চেষ্টা-তদবিরের পর ২০২১ সালে এসে নিবন্ধন অধিদপ্তরের (কর্মকর্তা ও কর্মচারী) নিয়োগ বিধিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত