দিকনির্দেশনার অভাব ও দক্ষতা সংকটে দেশের তরুণ জনগোষ্ঠী। উচ্চশিক্ষা লাভ করেও নিশ্চয়তা মিলছে না কর্মসংস্থানের। কারিগরি শিক্ষা হতে পারে এ সংকটের কার্যকর ও সময়োপযোগী সমাধান। হাতে-কলমে আন্তর্জাতিক চাহিদা অনুযায়ী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে বসুন্ধরা টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট (বিটিআই)। এখান থেকে দক্ষতা অর্জন করে শিক্ষার্থীরা দেশ-বিদেশের বিভিন্ন শিল্প খাতে কর্মসংস্থান পাচ্ছে। গতকাল দোহার উপজেলা পরিষদ সেমিনার হলে ‘বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব এবং কারিগরি শিক্ষার প্রসারে বিটিআইর ভূমিকা’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রকিব হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া তাবাসসুম। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মেজর মো. মহসিনুল করিম (অব.), বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সিনিয়র জি এম এ কে এম নওশেরুল আলম ও বসুন্ধরা টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ কাজী মো. শওকত-উল ইসলাম। সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন বিটিআইর ছাত্র উপদেষ্টা শাফী আহমেদ। সেমিনারে দোহার উপজেলার ২৬টি মাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ বিটিআইর শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
সূচনা বক্তব্যে কাজী মো. শওকত-উল ইসলাম বলেন, বিটিআই বর্তমানে সিভিল, কম্পিউটার, ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি নিচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন স্বল্পমেয়াদি কোর্স ও বিভিন্ন দেশের ভাষা শেখার সুযোগ রয়েছে। বিটিআই থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে শিক্ষার্থীরা দেশ-বিদেশের বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে কাজ করছে। কেরানীগঞ্জ এলাকায় কারিগরি শিক্ষার প্রসার ঘটিয়ে জীবনমানের উন্নয়নে অংশীজন হতে চায় বিটিআই। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তানিয়া তাবাসসুম বলেন, এ অঞ্চলের অনেক তরুণ আজও বেকারত্ব, দিকনির্দেশনার অভাব এবং দক্ষতা সংকটে ভুগছে। অনেকেই উচ্চশিক্ষা লাভ করেও কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা পাচ্ছে না। কারিগরি শিক্ষাই হতে পারে এ সংকটের কার্যকর সমাধান। এটি কেবল ব্যক্তির নয়, গোটা সমাজ ও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথ খুলে দেয়। বিটিআই এ অঞ্চলের তরুণদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে যে প্রশিক্ষণ ও সুযোগ প্রদান করছে, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। নওশেরুল আলম বলেন, দেশের উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি বিশাল তরুণ জনগোষ্ঠী। এ জনগোষ্ঠীকে যদি দক্ষতায় রূপান্তর করা না যায়, তবে তা আমাদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। অন্যদিকে কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে এ তরুণদের দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তর করে আমরা একটি উৎপাদনশীল ও টেকসই অর্থনীতি গড়ে তুলতে পারি। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও চীনের মতো দেশগুলো কারিগরি শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে উন্নতির পথে এগিয়েছে।