‘শিল্পিত সৃজনে কহিবো কথা, গাহিবো ঐক্যের গান’ শ্লোগানকে সামনে রেখে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হলো সর্বস্তরের শিল্পীদের অংশগ্রহণে শিল্পী সম্মিলন ও আর্ট ক্যাম্প।
শনিবার (২৩ আগস্ট) সকালে চট্টগ্রাম চারুকলা সুরক্ষা সাংস্কৃতিক ঐক্যের ডাক আয়োজিত এ দিনব্যাপী শিল্প উৎসবের উদ্বোধন হয় চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বরেণ্য চিত্রশিল্পী খাজা কাইয়ুম, আবৃত্তি সংগঠক আবদুল হালিম দোভাষ, নাট্যজন শিশির দত্ত, চট্টগ্রাম চলচ্চিত্র সংসদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা শৈবাল চৌধুরী, শিল্পী রওশান আরা রোশনা, শিল্পী লুঘ্র ঢুকে ক্ষী ধর, প্রণব দাশ, আনোয়ার কবির চৌধুরী, বীজন মজুমদার, সুজা উদ্দিন আহমেদ, মনজুর হোসেন, আবেশ কুমার ইন্দু, সন্জীত রায়, মিখাইল মোহাম্মদ রফিক, ফজলে রাব্বি; নাট্যজন মুনির হেলাল, জোবাইদুর রশীদ, আলোক মাহমুদ, মুহাম্মদ শাহ আলম, সাইফুল ইসলাম, শহীদুল করিম নিন্টু, মিসফাক রাসেল; নৃত্যশিল্পী শুভ্রা সেন, আবৃত্তিশিল্পী ফারুক তাহের ও সেলিম রেজা সাগরসহ আরও অনেক সংগীতশিল্পী, নৃত্যশিল্পী এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপকবৃন্দ।
তারা সম্মিলিতভাবে আর্ট ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন এবং ক্যানভাসে লাল-সবুজের রঙ ছড়িয়ে দেন। অনুষ্ঠানের শেষে ‘চারুকলা বাঁচাও, শিল্প বাঁচাও’ শীর্ষক একটি শপথ গ্রহণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে অতিথিরা বলেন, ‘চারুকলা বিদ্যাপীঠ কেবল একটি প্রতিষ্ঠান নয়, এটি চট্টগ্রামবাসীর আত্মপরিচয় ও চেতনাবোধের উৎস। শিল্পী রশিদ চৌধুরীর হাতে গড়া এই প্রতিষ্ঠানকে যথাযথ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করতে না পারলে আমাদের শিল্প-পরিচয় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
বক্তারা আরও বলেন, ‘চট্টগ্রাম চারুকলা সুরক্ষার আন্দোলন শুধুমাত্র শিল্পীদের নয়—এটি সমগ্র নগরবাসীর সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার ও আত্মমর্যাদা রক্ষার সংগ্রাম।’
সম্মিলনে অংশগ্রহণকারীরা চট্টগ্রামে পূর্ণাঙ্গ ও স্বায়ত্তশাসিত চারুকলা ও ললিতকলা বিষয়ক একটি সাংস্কৃতিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানান। একই সঙ্গে তারা জোরালোভাবে ঘোষণা করেন, ঐতিহ্যবাহী চারুকলা প্রাঙ্গণকে কোনো ক্লাব বা বাণিজ্যিক কার্যক্রমের জন্য ব্যবহার মেনে নেওয়া হবে না।
প্রসঙ্গত, শিল্পী রশিদ চৌধুরীর স্বপ্ন ও স্থানীয় মানুষের শ্রম ও সহযোগিতায় গড়ে ওঠা চট্টগ্রাম চারুকলা ইনস্টিটিউট দীর্ঘ অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে দেশের শিল্পচর্চার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ক্লাব গঠনের উদ্যোগে এ প্রাঙ্গণের ঐতিহাসিক মর্যাদা হুমকির মুখে পড়েছে বলে শিল্পী ও নাগরিক সমাজ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ