রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) ক্যাম্পাসে হাজারো গাছের ভিড়ে বিরল ও প্রায় বিপন্ন প্রজাতির ধূপগাছ এখন মনোমুগ্ধকর সুগন্ধ ছড়াচ্ছে। প্রকৃতিপ্রেমীরা এই গাছের সৌন্দর্য ও ঘ্রাণে মুগ্ধ হচ্ছেন।
মাঝারি আকৃতির ধূপগাছ, বিস্তৃত ডালপালার একটি চিরসবুজ বৃক্ষ, যা শত বছরেরও বেশি সময় বাঁচে। এর গুঁড়ি ও কাণ্ড সরল ও নলের মতো গোলাকৃতি, বাকল ধূসর ও সুগন্ধিযুক্ত। বাকলে খাঁজ ও ফাটল রয়েছে। কাণ্ড কাটা হলে বাদামি বা কালো রঙের আঠা বের হয়, যা শুকিয়ে ধূপ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
জুন-জুলাই মাসে গাছে হালকা সাদাটে ও কিছুটা হলুদাভ ফুল ফোটে এই গাছে। ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে ফল পাকে, যা নীলচে-কালো রঙ ধারণ করে। ফল মাংসল ও মিষ্টি ঘ্রাণযুক্ত। প্রাকৃতিকভাবে বনাঞ্চলে এই গাছ জন্মে, তবে এখন এটি প্রায় বিপন্ন প্রজাতির তালিকায়।
ধূপগাছের আঠা থেকে তৈরি ধূপ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ও সুগন্ধি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আরব দেশগুলোতে অতিথি আপ্যায়নে ধূপ পোড়ানোর প্রথা রয়েছে। চীনে দুই হাজার বছর ধরে ধর্মীয় ও চিকিৎসা প্রয়োজনে এই গাছের রস ব্যবহার হয়ে আসছে। ভারতেও ধূপগাছের আঠা থেকে তৈরি আগরবাতি পূজা-অর্চনায় ব্যবহৃত হয়। এই সুগন্ধি ধূপ আসে গাছ থেকে প্রাকৃতিকভাবে আঠা আকারে।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ জানান, ধূপ একটি প্রায় বিপন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ। এটি সাধারণ নার্সারিতে পাওয়া যায় না। প্রায় চার বছর আগে একটি ওষুধি গাছের নার্সারি থেকে এনে ক্যাম্পাসে লাগানো হয়েছিল। এখন গাছটি সুগন্ধ ছড়াচ্ছে। শিগগিরই বাকল কেটে কষ সংগ্রহ করা হবে।
তিনি বলেন, বৈচিত্র্যময় প্রকৃতির এক অনন্য গাছ ধূপ। আমরা যে ধূপ সুগন্ধি আকারে ব্যবহার করি, তার উৎস এই গাছ। বেরোবি ক্যাম্পাসে ধূপগাছটি এখন টগবগিয়ে বেড়ে উঠছে।
বিডি-প্রতিদিন/সুজন