দিনাজপুরের বীরগঞ্জে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে প্রকৃতির মলিন বাতাসে সবুজের মাঝে দোল খাচ্ছে বোরো ধানের শীষ। কেউবা ধান ঘরে তোলার আশায় ধান ক্ষেতে শেষ সময়ে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে। কিন্তু এসময়ে কৃষকের সেই স্বপ্নে ইঁদুরের হানায় বোরো চাষিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে।
ধানক্ষেতে ইঁদুরের উৎপাত থেকে ধান ক্ষেতকে রক্ষা করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। ধান ক্ষেতে ইঁদুর প্রবেশ করে ধানগাছ কেটে ফেলায় বিপাকে পড়েছে। ইঁদুরের উৎপাত বাড়তে থাকলে বোরো ধানের ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছে কৃষকরা। নিজ উদ্যোগে ইঁদুর নিধনে ফাঁদ ও কীটনাশক, খুঁটিতে ছোট ছোট পলিথিনসহ বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করে কোনো সুফল পাচ্ছে না বলে জানিয়েছে কৃষকরা।
তবে কৃষি অফিস বলছে, উপজেলায় মোট আবাদি জমির পরিমাণ ৩২ হাজার ৮৯ হেক্টর। এর মধ্যে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ৯৬৯ হেক্টর জমিতে। কিন্তু অর্জিত হয়েছে ১৪ হাজার ৭৬৯ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রায় জমির পরিমাণে ইঁদুর আক্রমণের সংখ্যা সামান্য জমিতে। এই সমস্য খুব বড় রকমের নয়। সময় মতো বিষ প্রয়োগ এবং সঠিক পরিচর্যা করলে তেমন একটা ক্ষতির মুখে পড়বে না বোরা চাষিরা।
মোহনপুর ইউপির দক্ষিণ পলাশবাড়ী গ্রামের কৃষক ফরহাদ হোসেন বলেন, আমি ২০ শতক জমিতে বোরো ধান চাষ করেছি। আবহাওয়া ভালো থাকায় ধান ক্ষেতে পোকার আক্রমণ নেই। তবে ইঁদুরের উৎপাত ধান ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি করছে। ধান ক্ষেতের বিভিন্ন জায়গায় ধান গাছগুলো কেটে দিচ্ছে। যদিও ফাঁদ ব্যবহার করছি, কাজ হয় না। আর এভাবে চলতে থাকলে ধানের আশানুরূপ ফলন পাওয়ার চেয়ে লোকসানের মুখে পড়তে হবে।
একই ইউনিয়নের চৌক-উজিরা গ্রামের কৃষক জাহিরুল ইসলাম বলেন, ৫০ শতক জমি ধান চাষ করেছি। ফলন খুব ভালো হয়েছে। এবার কোনো রকম রোগবালাই নেই। তবে ধান ক্ষেতে ইঁদুরে উৎপাতে প্রতিদিনেই ধানের শীষগুলো গোড়া থেকে কেটে দিচ্ছে। তা দেখে ক্ষেতের উপর পলিথিন ও ফাঁদ ব্যবহার করছি। তারপরও ধান গাছ কেটে শেষ। এভাবে চলতে থাকলে খরচের টাকা ঘরে তোলা কঠিন হয়ে পড়বে।
এ ব্যাপারে বীরগঞ্জ উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আনিসুর রহমান বলেন, সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কীটনাশক ব্যবহারসহ কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। এ ব্যাপারে কৃষকরা যদি সঠিকভাবে পরিচর্যা নিতে পারে, তাহলে ফসলের তেমন কোনো ক্ষতি হবে না।
বিডি প্রতিদিন/এমআই