প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে কৃষি। নব্বই দশকের কৃষি আর আজকের কৃষি সত্যি অভাবনীয়। এখনকার কৃষিতে শিক্ষিত তরুণদের মেধা-শ্রমে বদলে যাচ্ছে পুরো কৃষি ব্যবস্থাপনা। ফলে শখের বশে নয়, কৃষি হচ্ছে স্মার্ট তরুণদের পেশা। তেমনি এক তরুণ উচ্চশিক্ষিত স্মার্ট উদ্যোক্তা শাহিনুল ইসলাম বকুল। রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা বিভাগে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। চাকরির পেছনে না ঘুরে মন দেন কৃষিতে। কৃষিতে জাতীয় পদকসহ পেয়েছেন বেশ কয়েকটি পুরস্কার। বদলে দিয়েছেন রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার কৃষি ব্যবস্থাপনা। একাধারে মৎস্য চাষ, পরিবেশবান্ধব সবজি, বিভিন্ন ধরনের আম ও ফল চাষ, উত্তম সেচ ব্যবস্থাপনাসহ এবং বিভিন্ন সামাজিক ও সচেতনমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে কেড়েছেন সাধারণ মানুষের মন। রাখছেন কৃষি অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। শাহিনুল ইসলাম বকুল কৃষি তথ্য সার্ভিস রংপুরের আঞ্চলিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহাদাৎ হোসেনের পরামর্শে পরীক্ষামূলকভাবে পরিত্যক্ত আম বাগানের নিচে বস্তায় আদা চাষ শুরু করেন। আর তাতেই পান সফলতা।
পরবর্তীতে রংপুরের বুড়িরহাট হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. আবু সায়েমের পরামর্শে ও সার্বিক সহযোগিতায় ৫০০ বস্তায় আদা চাষের প্রদর্শনীসহ হাঁড়িভাঙা আম বাগানের পরিত্যক্ত জমিতে ১২ হাজার বস্তায় বাণিজ্যিকভাবে আদা চাষ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন। ফলনও পেয়েছেন ভালো। প্রতি বস্তা আদা উৎপাদন খরচ ৭০-৮০ টাকা। উৎপাদিত আদা বিক্রয় হয় ১২০-১৫০ টাকা। তিনি বারি-২ ও স্থানীয় থাইল্যান্ড জাতের আদা চাষ করে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন।
শাহিনুল ইসলাম বকুল বলেন, এক হাঁড়িভাঙা আমেই এলাকার কিষান-কিষানিদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছে। আর সেই হাঁড়িভাঙা আমের পরিত্যক্ত জমি বা বাড়ির আশপাশের জমিতে কৃষকের ভাগ্য পরিবর্তনের স্বপ্ন (বস্তায় আদা চাষ) ডাক দিচ্ছে। আদা একটি মসলা জাতীয় ফসল। আমদানিনির্ভর। বস্তায় আদা চাষ করা একটি লাভজনক পেশা। ইতোমধ্যে কয়েকটি গ্রামে প্রত্যেক বাড়িতে ১০-২০ বস্তায় আদা চাষের কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। হর্টিকালচার সেন্টার বুড়িরহাট রংপুরের সার্বিক সহযোগিতাও চেয়েছেন। বুড়িরহাট হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক ড. মো. আবু সায়েম বলেন, বস্তায় আদা চাষ শুরু হওয়ায় কৃষিতে নতুন এক দিগন্তের সৃষ্টি হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই