চোট পেয়ে ক্যারিয়ারের নানা সময়ে কান্নাভেজা চোখে মাঠ ছেড়েছেন নেইমার। এবারও তার চোখে দেখা গেল পানি। তবে চোটের কারণে নয়, বড় পরাজয়ের ব্যথায়! ক্যারিয়ারের জঘন্যতম হারের পর ব্রাজিলিয়ান তারকার হৃদয়ের ক্ষত যেমন চোখের জল হয়ে ঝরল, তেমনি ফুটে উঠল তার কণ্ঠেও। আবেগের বিস্ফোরণে বললেন, এমন কিছুর অভিজ্ঞতা তার আগে হয়নি।
ব্রাজিলিয়ান সেরি আর ম্যাচে সান্তোস ঘরের মাঠেই ভাস্কো দা গামার কাছে হেরে যায় ৬-০ গোলে। নেইমারের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে পরাজয় এটি। এবারের লিগে ভাস্কো দা গামা ক্লাবও ধুঁকছিল। এই ম্যাচের আগে ১৭ ম্যাচে স্রেফ ৪ জয়ে তাদের পয়েন্ট ছিল ১৬। সেই দলের কাছেই বিধ্বস্ত হলো সান্তোস।
ম্যাচ শেষে নেইমার বলেন, ‘আমি লজ্জিত। আমাদের পারফরম্যান্সে আমি সম্পূর্ণ হতাশ। সমর্থকদের প্রতিবাদের পুরোপুরি অধিকার আছে, অবশ্যই সহিংসতা পরিহার করে। তারা যদি গালি দেয় বা অপমান করে, সেটারও অধিকার তাদের আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা চরম লজ্জার অনুভূতি। জীবনে কখনো এমনটা হয়নি। দুর্ভাগ্যবশত এবার হলো। কান্না এসেছিল রাগ থেকে, যা ঘটেছে সবকিছুর জন্য। দুর্ভাগ্যবশত আমি সবদিক দিয়ে সাহায্য করতে পারি না। যা–ই হোক, পুরো ব্যাপারটাই ছিল একেবারে বাজে, এটাই বাস্তবতা।’
ব্রাজিলিয়ান লিগ সিরি আ’র এই ম্যাচে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই গড়তে পারেনি নেইমারের দল। ম্যাচের প্রথমার্ধে অবশ্য মাত্র এক গোল খেয়েছিল সান্তোস। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে ভাস্কো দা গামা একে একে পাঁচবার বল জড়ায় সান্তোসের জালে।
এই ম্যাচের আগে নেইমারের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় হার ছিল ৪–০ গোলের। ২০১১ সালে সান্তোসে খেলার সময় বার্সেলোনার বিপক্ষে (ক্লাব বিশ্বকাপের ম্যাচ) এবং ২০১৭ সালে বার্সেলোনায় খেলার সময় পিএসজির বিপক্ষে (চ্যাম্পিয়নস লিগে) এমন হারের স্বাদ পেয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু আজ সেই দুই হারও পেছনে পড়ে গেল। ২০১৪ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে স্বাগতিক ব্রাজিল জার্মানির কাছে ৭–১ গোলে বিধ্বস্ত হলেও সে ম্যাচে চোটের কারণে মাঠের বাইরে ছিলেন নেইমার। এই ম্যাচের আগে স্বাভাবিকভাবেই সবার চোখ ছিল নেইমার ও তাঁর জাতীয় দল সতীর্থ ফিলিপে কুতিনিওর দিকে। নেইমার প্রতিনিধিত্ব করছিলেন সান্তোসের আর কুতিনিও ভাস্কো দা গামার।
মাঠের লড়াইয়ে কুতিনিওর দলের সামনে নেইমাররা যে দাঁড়াতেই পারেননি, সেটি স্কোরলাইনই বলে দিচ্ছে। এমনকি ব্যক্তিগতভাবেও এই ম্যাচে জয় হয়েছে কুতিনিওরই। ভাস্কো দা গামার ৬ গোলের দুটি করেছেন সাবেক লিভারপুল ও বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড। গোল দুটি হয় ম্যাচের ৫৪ ও ৬২ মিনিটে।
দুর্দান্ত এই জয়ে অবনমন অঞ্চল থেকেও বেরিয়ে এসেছে ভাস্কো দা গামা। ১৮ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে ১৬ নম্বর অবস্থানে আছে তারা। অন্যদিকে এক ম্যাচ বেশি খেলে ২১ পয়েন্ট নিয়ে সান্তোস আছে ১৫ নম্বরে।
সান্তোসের এত বড় হারের কিছুক্ষণ পরই প্রধান কোচ ক্লেবার হাভিয়েরকে বরখাস্ত করেছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ। এক বিবৃতিতে ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ারের জন্য শুভকামনা জানিয়ে হাভিয়েরকে ছাঁটাইয়ের কথা নিশ্চিত করেছেন সান্তোসই।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম