‘আমরা যখন টেস্ট খেলতাম, তখন কোনো ক্রিকেটারের ১০০ টেস্ট খেলার বিষয়ে আলাপ করতাম। একই সঙ্গে এটাও ভাবতাম, বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটারের পক্ষে হয়তো ১০০ টেস্ট খেলা সম্ভব নয়। কারণ টেস্ট অভিষেকের পর আমরা খুব বেশি টেস্ট খেলার সুযোগ পেতাম না।’ বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটার ক্যারিয়ারে ১০০ টেস্ট খেলবেন, এমন ভাবনা কখনো করেছেন কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ৫০ টেস্ট খেলা হাবিবুল বাশার কথাগুলো বলেন।
২০০৫ সালে লর্ডসে মুশফিকুর রহিমের অভিষেক। ২০ বছরের লম্বা ক্যারিয়ারে মুশফিক আগামীকাল ১০০ টেস্ট খেলতে নামবেন মিরপুরে। বিষয়টি অবিশ্বাস্য হলেও সাবেক অধিনায়ক বাশার ভীষণ আনন্দিত মুশফিকের বিরল রেকর্ডের ইতিহাসে, ‘এক সময় যা ছিল কল্পনা, আজ সেটা বাস্তব। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে মুশফিক ১০০ টেস্ট খেলবেন, খুব ভালো লাগছে।’ পৃৃথিবীতে বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক ৮৪ নম্বর ক্রিকেটার হিসেবে ১০০ টেস্ট খেলবেন।
২০০৫ সালে মুশফিকের অভিষেক। দলে খালেদ মাসুদ পাইলট থাকার পরও দ্বিতীয় উইকেটরক্ষক হিসেবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক হয় লর্ডসে ১৯ বছরের এক তরুণের। দলের সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে তার অভিষেক হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত ছিল না। অভিষেক টেস্টের দুই ইনিংসে ১৯ ও ৩ রান করেছিলেন। ইনিংস দুটি লম্বা না হলেও টেম্পারমেন্ট, টেকনিক ও স্কিলে মুগ্ধ ছিলেন বাশার। বড় ইনিংস না খেললেও বাশারের মনে হয়েছিল মুশফিক লম্বা রেসের ঘোড়া, ‘দেখতে ছোটখাটো গড়নের মুশফিকের টেম্পারমেন্ট দেখে আমার ভালো লেগেছিল। ১০০ টেস্ট খেলবেন কি না, তখনই মনে হয়নি। কিন্তু এটা মনে হয়েছিল, দেশ একজন ভালোমানের ক্রিকেটার পেতে যাচ্ছে।’ অভিষেকের পর গত ২০ বছরে ৯৯তম টেস্ট খেলেছেন সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ইনিংস ও ৪৭ রানে জেতা টেস্টে মুশফিক রান করেন ২৩। ৯৯ টেস্ট ক্যারিয়ারে সাবেক অধিনায়ক রান করেছেন ১৮২ ইনিংসে ৬৩৫১। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। সেঞ্চুরি ১২টি। ডাবল সেঞ্চুরি ৩টি। দেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরি করেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গলে। ২০০৫ সালে শুরু। এরপর ২০ বছরে টেস্টের বাইরে খেলেছেন ওয়ানডে ও টি-২০। তিন ফরম্যাটেই বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এখন শুধু টেস্ট খেলছেন। দুই দশক ধরে মুশফিকের টেস্ট খেলার কারণ ক্রিকেটের প্রতি তার প্যাশন রয়েছে বলেন, ‘আমরা সবাই পেশাদার ক্রিকেটার। আমরা জানি, আমাদের কাজ কী? কিন্তু মুশফিক ২০ বছর ধরে ক্রিকেট খেলছেন, ১০০তম টেস্ট খেলবেন, এর একটাই কারণ ক্রিকেটের প্রতি তার প্যাশন বা আবেগ। ফিটনেসও অনেক ভালো। আমার ধারণা ক্রিকেটের প্রতি তার ভালোবাসা, আবেগ অন্য যে কারোর চেয়ে বেশি। সে ১০০ টেস্ট খেলছেন।’