মেয়েদের ফুটবলে একের পর এক সুখবর আসছেই। গত বৃহস্পতিবার ফিফার কাছ থেকে র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতির সুখবর পেয়েছেন আফঈদা খন্দকাররা। একদিন পরই দেশকে দারুণ এক জয় উপহার দিয়েছেন তারা। গতকাল এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে পূর্ব তিমুর ৮-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। এ জয়ে টুর্নামেন্টের চূড়ান্ত পর্বের পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। টানা দুই ম্যাচ জিতে ৬ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছেন আফঈদারা। পরের ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে জয় না পেলেও সেরা রানারআপ হিসেবে চূড়ান্ত পর্বে খেলার সুযোগ থাকবে বাংলাদেশের। আট গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন দলের পাশাপাশি সেরা তিন রানারআপ খেলবে চূড়ান্ত পর্বে।
লাওসের বিপক্ষে বাছাইপর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ৩-১ গোলের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। অনেক সুযোগ তৈরি করেও সেই ম্যাচে বড় ব্যবধানের জয় পাননি সাগরিকারা। গতকাল সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছেন তারা। দুই অর্ধেই বাংলাদেশ চারটি করে গোল করে। হ্যাটট্রিক করেন তৃষ্ণা। এ ছাড়া একটি করে গোল করেন সাগরিকা, শান্তি মারডি, নবিরন খাতুন, মুনকি ও শিখা।
ম্যাচের ২০ মিনিটে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম গোল করেন সিনহা শিখা। ৩৩ মিনিটে শান্তি মারডির গোলে ব্যবধান বাড়ায় বাংলাদেশের মেয়েরা। শান্তির গোলটি দর্শকদের মুগ্ধ করে। তিনি কর্নার কিক থেকে সরাসরি গোল করেন। এ ধরনের গোলকে ‘অলিম্পিক গোল’ বলা হয়। এর তিন মিনিট পর নবিরন খাতুন বাংলাদেশের ব্যবধান ৩-০ করেন। প্রথমার্ধ্বের যোগ করা সময়ে দলের চতুর্থ গোলটি করেন তৃষ্ণা। ৫৭ ও ৮২ মিনিটে আরও দুটি গোল করে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন তৃষ্ণা। তৃষ্ণার হ্যাটট্রিকের মাঝখানে ৭৩ মিনিটে সাগরিকা দলের ষষ্ঠ গোলটি করেন। এ ছাড়া ম্যাচের যোগ করা সময়ে মুনকি আক্তারের গোলে বাংলাদেশের ৮-০ ব্যবধানের জয় নিশ্চিত হয়। অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের এইচ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে কাল দক্ষিণ কোরিয়ার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশের মেয়েরা।
দারুণ জয়ের পর বাংলাদেশের ইংলিশ কোচ পিটার বাটলার বলেছেন, ‘আমরা ম্যাচটা ধীরে শুরু করেছি। প্রথম ১০ মিনিটে আমরা দেখেশুনেই খেলেছি। এরপর আমরা ম্যাচে আধিপত্য দেখিয়েছি। আমি মেয়েদের বলেছিলাম, তোমরা গোলের জন্য মরিয়া হয়ে যেও না। ধৈর্য ধরে খেলতে থাকো। গোলের সুযোগ তৈরি করো। গোল হবেই।’ শিষ্যদের প্রশংসা করেছেন তিনি। তবে এখানেই থামতে চান না তিনি। এ টুর্নামেন্ট থেকে শিক্ষা নিয়ে আরও বড় লক্ষ্যের দিকে ছুটতে চান বাটলার।
এদিকে গতকাল এএফসি অনুর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে এইচ গ্রুপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে লাওসকে ১-০ গোলে হারিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। ম্যাচের শেষদিকে গোল হজম করে স্বাগতিক লাওস। কোরিয়ার মেয়েরা প্রথম ম্যাচে তিমুর লিস্টেকে ৯-০ গোলে হারিয়েছিল। দুই ম্যাচে ৬ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে কোরিয়ার মেয়েরা। সমান পয়েন্ট রয়েছে বাংলাদেশেরও। তবে গোল বেশি করায় শীর্ষে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। দুই ম্যাচে আফঈদাদের গোল ব্যবধান +১০। ১১ গোল করার বিপরীতে কেবল একটি গোল হজম করেছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে কোরিয়ার মেয়েদের গোল ব্যবধানও +১০। তারা কোনো গোল হজম করেনি। তবে গোল দেওয়ার সংখ্যায় বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে আছে। এইচ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে কাল বাংলাদেশ-দক্ষিণ কোরিয়া মুখোমুখি হবে। এই ম্যাচে ড্র করলেও সরাসরি টুর্নামেন্টের চূড়ান্ত পর্বে খেলার সুযোগ পাবে বাংলাদেশের মেয়েরা।