বাফুফে মাঝে মধ্যে এমন কিছু কাণ্ড ঘটায় যা সত্যিই বিস্ময়কর। এমন আচরণে প্রশ্ন ওঠে প্রকৃত যোগ্যদের তারা মূল্যায়ন করার যোগ্যতা রাখেন কি না? প্রসঙ্গটি উঠেছে জাতীয় দলের স্কোয়াড নিয়ে। ৯ অক্টোবর ঢাকায় এশিয়ান কাপ বাছাই ফুটবলে বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে হংকং চায়নার বিপক্ষে। ১৪ অক্টোবর আবার হংকংয়ে অ্যাওয়ে ম্যাচ। গুরুত্বপূর্ণ দুটি ম্যাচের জন্য ২৮ সদস্যের প্রাথমিক স্কোয়াড ঘোষণা করেছে। পরে একজনকে নিয়ে সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯। বাংলাদেশের চূড়ান্ত পর্বে খেলার আশা টিকিয়ে রাখতে দুই ম্যাচে জয় ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই। হংকং বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হিসেবে কতটা শক্তিশালী তা দুই দেশের ম্যাচ পরিসংখ্যান দেখলে স্পষ্ট হয়ে উঠবে।
এবার বাছাইপর্বেও হংকং চায়না দুর্দান্ত খেলছে। গ্রুপে তারা দুই ম্যাচ সিঙ্গাপুরের সমান চার পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। ভারতের বিপক্ষে জয় ও শীর্ষে থাকা সিঙ্গাপুরের সঙ্গে ড্র করেছে। অন্যদিকে সমান ম্যাচে বাংলাদেশের সংগ্রহ এক পয়েন্ট। ফুটবলপ্রেমীদের প্রত্যাশা শক্তিশালী দল গড়ে হংকংয়ের বিপক্ষে জিতবে। সেই প্রত্যাশা পূরণ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। প্রাথমিক স্কোয়াড নিয়েই এখন বিতর্কের ঝড় বয়ে যাচ্ছে। হামজা, সামিত, ফাহমিদুলের সঙ্গে আরেক প্রবাসী জায়ান আহমেদ স্কোয়াডে রয়েছেন। ফুটবলপ্রেমীদের আশা ছিল হংকং ম্যাচেই সান্ডারল্যান্ডে খেলা কিউবা মিচেলের অভিষেক হবে। দেশসেরা ক্লাব বসুন্ধরা কিংসে নাম লেখানোর পর তো স্বাভাকিভাবে ধরে নেওয়া হয়েছিল জাতীয় দলে তার অভিষেকটা শুধু সময়ের ব্যাপার। কিন্তু জাতীয় দল তো দূরের কথা প্রাথমিক স্কোয়াডেও ডাক পাননি মিচেল। হামজার পর যে প্রবাসীকে নিয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে তার নাম কিউবা মিচেলই। অল্প বয়সে যে ছেলে ইংল্যান্ডে বয়সভিত্তিক লিগ খেলে আলোড়ন তুলেছেন তারই কি না জায়গা হয় না প্রাথমিক স্কোয়াডে। স্কোয়াড তো কোচই তৈরি করেন। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। এখানে আবার কোচের চেয়ে কর্মকর্তাদের প্রভাব বেশি। তাদের পছন্দের ওপরই নাকি নির্ভর করে জাতীয় দলে কারা সুযোগ পাবেন? এখন না, জন্ম থেকেই তা হচ্ছে। কোচ বা কর্মকর্তা যারই কথা বলি না কেন, কিউবা মিচেলের বাদ পড়াটা রহস্য তৈরি হয়েছে। চূড়ান্ত দল তো পরের কথা প্রাথমিক স্কোয়াডেই ডাক পাবেন না তা কি হয়? অবশ্য বাফুফে কাজের চেয়ে আশ্চর্য ঘটনা বেশি ঘটায়। হয়তো মিচেল এ আশ্চর্যের শিকার। এখনো তো স্থানীয় ও ফরেনের বিতর্ক নেই। সবাই বাংলাদেশি। তারপরও বলি পেশাদার লিগে খেলা যারা প্রাথমিক স্কোয়াডে ডাক পেয়েছেন তাদের তুলনায় মিচেল এতই অযোগ্য যে, জায়গা মেলে না। পরে তো মোহামেডানের শান্তকে অনুশীলনে ডাকা হয়েছে। মিচেলকে তারা প্রয়োজনই মনে করছেন না। প্রাথমিক স্কোয়াডে কেন মিচেল নেই? অনেক সময় তো বাফুফের শিকার হয় ক্লাবগুলো। তাহলে মিচেল যে ক্লাবে খেলছেন বলেই কি ডাক পাননি। এ নোংরামী চললে দেশের ফুটবল এগোবে কীভাবে? যোগ্যরা ষড়যন্ত্রের শিকার হতে থাকলে তো ফুটবল যেখানে বন্দি সেখানেই থেমে থাকবে।