সিলেটের জেলা প্রশাসক সারওয়ার আলম বলেন, ‘আগামী এক-দুই মাসের মধ্যে জটিলতা কাটিয়ে সিলেট জেলা হাসপাতালের কার্যক্রম চালু হবে। তখন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর চাপ কমবে এবং ওসমানীতে চিকিৎসক সঙ্কট যেটা রয়েছে সেটিও কেটে যাবে। সিলেট খুব অল্প সময়ের মধ্যে একটি সয়ংসম্পূর্ণ ক্যান্সার হাসপাতাল তৈরি করা হবে। যাতে করে সিলেটের ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের ঢাকা কিংবা দেশের বাইরে যেতে না হয়। আগামী ৩ মাসের মধ্যে সিলেটের ক্যান্সার হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হবে।’
বৃহস্পতিবার সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে নির্মিতব্য ক্যান্সার ইউনিটের কাঠামোগত উন্নয়ন পরিদর্শনে আসেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন সিলেটের জেলা প্রশাসক সারওয়ার আলমসহ সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
পরিদর্শন শেষে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল উন্নয়নে চলমান কার্যক্রম সম্পর্কে জেলা প্রশাসক সারওয়ার আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি।’
তিনি জানান, গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধি দল হাসপাতাল পরিদর্শনে এসেছেন। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পরিদর্শন করা। ক্যান্সার হাসপাতালের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। তারা দেখতে এসেছেন কাজ কতদূর অগ্রসর হয়েছে এবং সম্পূর্ণ হতে আর কত সময় লাগবে। আমরা আশা করছি আগামী ৩ মাসের মধ্যেই ক্যান্সার হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে। এই হাসপাতাল চালু হলে সিলেটসহ পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের আর ঢাকায় বা দেশের বাইরে যেতে হবে না।
তিনি আরও বলেন, ‘ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গঠনমূলক ও কাঠামোগত বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। এই সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। চিকিৎসকদের বসার মতো উপযুক্ত জায়গাও নেই, যা খুবই দুঃখজনক। আমরা এই সমস্যাগুলোর সমাধানে কাজ করছি।’
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘৫০০ শয্যার এই হাসপাতালে প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন হাজার রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন, যা একটি বিশাল চাপ সৃষ্টি করছে। প্রতিনিধি দল মূলত নতুন ভবনের কাজের অগ্রগতি দেখতে এসেছেন। আশা করছি আগামী ২-৩ মাসের মধ্যে এই ভবনের কাজ সম্পন্ন হবে এবং রোগীদের সেখানে স্থানান্তর করা যাবে।’
সারওয়ার আলম বলেন, ‘আগামী এক থেকে দুই মাসের মধ্যেই সিলেট জেলা হাসপাতালের কার্যক্রম চালু হবে। এতে করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর চাপ অনেকটাই কমে আসবে। এর ফলে চিকিৎসার মান আরও উন্নত হবে এবং চিকিৎসকরাও স্বস্তিতে কাজ করতে পারবেন।’
জেলা প্রশাসক জানান, ‘ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে দালালমুক্ত করতে ইতোমধ্যে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এখানকার চিকিৎসক ও নার্সরা অত্যন্ত আন্তরিকভাবে কাজ করছেন, কিন্তু অতিরিক্ত রোগীর চাপে সেবা ব্যাহত হচ্ছে। ৫০০ শয্যার জনবল থাকলেও রোগী সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার। তার সঙ্গে রোগীর স্বজনদের অতিরিক্ত ভিড় ব্যবস্থাপনা আরও জটিল করে তোলে। আমরা এই পরিস্থিতি পরিবর্তনের জন্য নিরলসভাবে কাজ করছি।’
জেলা প্রশাসক সারওয়ার আলম আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমরা আশা করছি! খুব শিগগিরই সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্বিক সেবার মান উন্নত হবে এবং এ অঞ্চল একটি পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার হাসপাতালসহ আধুনিক চিকিৎসা সুবিধায় সমৃদ্ধ হবে।’
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত