আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অব নর্থ টেক্সাস এবং স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকরা পরীক্ষাগারে রক্তনালীসহ ক্ষুদ্র হৃদ্যন্ত্র ও লিভার তৈরি করতে সফল হয়েছেন। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই সাফল্য রোগ গবেষণা ও নতুন ওষুধ পরীক্ষায় বড় ধরনের অগ্রগতি আনবে।
অর্গানয়েড হলো মানব অঙ্গের ক্ষুদ্র ও সরল সংস্করণ, যা স্টেম সেল কোষ থেকে গড়ে তোলা হয়। আগে পর্যন্ত এর সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা ছিল রক্তনালী তৈরি না হওয়া। কিন্তু এবার গবেষক দল বিশেষ পদ্ধতিতে স্টেম সেলকে নির্দিষ্ট আকারে গড়ে তুলে এবং সময়মতো পুষ্টি ও রাসায়নিক উপাদান যোগ করে রক্তনালীসহ হৃদ্যন্ত্র ও লিভারের ক্ষুদ্র মডেল তৈরি করতে পেরেছেন।
গবেষণায় দেখা গেছে, তৈরি করা ক্ষুদ্র হৃদ্যন্ত্র (মিনি হার্ট) ৯-১০ দিনের মাথায় স্পন্দিত হতে শুরু করে। দুই সপ্তাহের মধ্যে সেখানে শাখাযুক্ত রক্তনালী তৈরি হয় এবং বাস্তব হৃদ্যন্ত্রের মতো তিনটি স্তর (লেয়ার) গড়ে ওঠে। এমনকি কিছু স্নায়ুকোষও তৈরি হয়েছে। এগুলো মানুষের গর্ভাবস্থার প্রায় সাড়ে ৬ সপ্তাহের ভ্রূণ অবস্থার হৃদ্যন্ত্রের সঙ্গে মিল রয়েছে। একই কৌশলে গবেষকরা রক্তনালীযুক্ত ক্ষুদ্র লিভারও তৈরি করেছেন।
যদিও এই ক্ষুদ্র অঙ্গগুলোতে এখনো পূর্ণ রক্তসঞ্চালন সম্ভব হয়নি, তবুও ফাঁপা রক্তনালী তৈরি হওয়া বড় সাফল্য বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
গবেষকদের মতে, এই প্রযুক্তি ভবিষ্যতে আরও বাস্তবসম্মত অঙ্গ মডেল তৈরি করতে সাহায্য করবে। এতে রোগের অগ্রগতি বোঝা, ওষুধের প্রতিক্রিয়া যাচাই করা এবং ব্যক্তিভিত্তিক চিকিৎসা সহজ হবে। একই সঙ্গে নতুন ওষুধ দ্রুত ও নিরাপদভাবে আবিষ্কার করার পথ খুলে দেবে।
তবে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এখনো মানবদেহের জটিল ধমনি-শিরার মতো বড় রক্তনালী তৈরি করতে গবেষণা চালিয়ে যেতে হবে। পাশাপাশি ন্যানোম্যাটেরিয়াল যুক্ত করার দিকেও কাজ চলছে, যা ভবিষ্যতে জিন থেরাপি ও উন্নত রোগ নির্ণয়ে সহায়তা করতে পারে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল