শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে টানা চার দিনের ছুটিতে গত মঙ্গলবার থেকেই ঢাকা ছাড়তে শুরু করে নগরবাসী। গতকালও তা অব্যাহত ছিল। টানা ছুটিতে কেউ বাড়ি ফিরছেন, কেউ আবার পরিবার নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছেন। মানুষের এই ঢল সড়ক ও মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি করে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে সৃষ্ট যানজটে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। মঙ্গলবার রাত ৩টা থেকে বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড থেকে মেঘনা টোল প্লাজা পর্যন্ত প্রায় ১৯ কিলোমিটার এলাকায় যানবাহন দীর্ঘ সময় আটকে ছিল। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভৈরব, নরসিংদী ও আড়াইহাজার অংশেও গাড়ি চলেছে ধীরগতিতে। মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে টানা ছয় ঘণ্টার বৃষ্টিতে রাজধানী ও তার আশপাশের এলাকায় সৃষ্ট জলজটের কারণেও ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে। ভারী বৃষ্টি এবং মহাসড়কের সোনারগাঁয়ের দড়িকান্দি এলাকায় একটি ট্রাক বিকল হয়ে পড়ায় মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে যানজট সৃষ্টি হয়। বুধবার বিকাল পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড থেকে চিটাগাং রোড, কাঁচপুর হয়ে সোনারগাঁ পর্যন্ত যানজট ছিল। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাঁচপুর থেকে বরপা এবং ঢাকা বাইপাস সড়কের মদনপুর, মীরেরটেক বস্তল এলাকাতেও গতকাল দুপুর পর্যন্ত যানজট ছিল।
যাত্রীরা জানিয়েছেন, সাধারণত দিনে সাইনবোর্ড থেকে মেঘনা টোল প্লাজা পর্যন্ত যেতে যেখানে আধা ঘণ্টা লাগে, গতকাল সেখানে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা লেগেছে। হাইওয়ে পুলিশের দায়িত্বহীনতার কারণে যানজটের আকার তীব্র হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন যাত্রীরা।
ঢাকা থেকে সিলেট বাসের যাত্রী রফিক মিয়া ফোনে প্রতিবেদককে বলেন, ‘পুজোর ছুটি পেয়ে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি। এখন ভয়াবহ যানজটে পড়েছি। কখন পৌঁছাতে পারব তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।’ ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাচ্ছেন রাব্বি আহমেদ। তিনি বলেন, যানজট মোগড়াপাড়া থেকে সাইনবোর্ড ছাড়িয়ে গেছে। দীর্ঘ সময় ধরে গাড়ি একই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে।
হাইওয়ে পুলিশ জানায়, অতিরিক্ত গাড়ির চাপ সামলাতে মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে চাপ বেশি থাকায় যানজট স্বাভাবিক হতে সময় লাগছে।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাদের জিলানী গতকাল সন্ধ্যায় বলেন, বৃষ্টির কারণে এবং গাড়ির চাপ দ্বিগুণ হওয়ায় যানজট তৈরি হয়েছিল। বর্তমানে যানজট কেটে গেছে। যান চলাচল স্বাভাবিক করতে পুলিশ কাজ করছে।
শিমরাইল হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জুলহাস উদ্দিন জানান, মঙ্গলবার রাতে ও গতকাল সকালে মহাসড়কের পৃথক দুটি স্থানে যানবাহন বিকল হয়ে পড়ায় এ যানজটের সৃষ্টি হয়েছিল।