মাত্র ১ রানের জন্য অক্ষত রয়ে গেল নিউজিল্যান্ডের রেকর্ডটি। ১৯৫৫ সালে অকল্যান্ড টেস্টের তৃতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২৬ রানে অলআউট হয়েছিল নিউজিল্যান্ড। ১৪৮ বছরের টেস্ট ইতিহাসে এক ইনিংসে সর্বনিম্ন রানে অলআউটের রেকর্ড এটি। পরশু রাতে কিংস্টনের সাবিনা পার্কে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন ২৭ রানে অলআউট হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রানে অলআউটের টেস্টে বেশ কিছু রেকর্ড হয়েছে। দিবা-রাত্রির টেস্টে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে হ্যাটট্রিক করেন অস্ট্রেলিয়ার স্কট বোল্যান্ড। সবচেয়ে কম ১৫ বলে ৫ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড গড়েন মিচেল স্টার্ক। ১৮তম ক্রিকেটার হিসেবে ৪০০ উইকেটের ক্লাবে নাম লেখান বাঁ হাতি এ পেসার। ১০০ টেস্টে তার উইকেট এখন ৪০২টি। টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে এই প্রথম কোনো ইনিংসে ৭ ব্যাটার শূন্য রানে আউট হয়েছেন। এক ইনিংসে শূন্য রানে আউটের রেকর্ড ছিল ছয়জনের। নিউজিল্যান্ড ২৬ রানে অলআউটের রেকর্ডটিতে শূন্য মেরেছিলেন পাঁচ ব্যাটার।
কিংস্টন টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ হেরেছে ১৭৬ রানের লজ্জাজনক ব্যবধানে। টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ২২৫ ও ১২১ এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ১৪৩ ও ২৭। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দুই ইনিংস মিলিয়ে রান করেছে ১৭০। যা টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে কম রান। আগের রেকর্ডটিও ক্যারিবীয়দের। ১৯৫৭ সালে দ্য ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ইনিংস মিলিয়ে ১৭৫ রান করেছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৭ রানে অলআউট হয়েছে ১৪.৩ ওভারে। তাদের চেয়ে কম ওভার খেলে অলআউটের রেকর্ড অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকার, ১৯২৪ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১২.৩ ওভারে গুটিয়ে গিয়েছিল।
কিংস্টন টেস্টে জিততে ওয়েস্ট ইন্ডিজের টার্গেট ছিল ২০৪ রানের। আকাশসমান টার্গেট নয়। কিন্তু ছন্নছাড়া ব্যাটিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য ছিল আকাশ ছোঁয়ার মতো! ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের প্রথম বলে উইকেট হারায় কারিবীয়রা। প্রথম আঘাত হানেন ক্যারিয়ারের শততম টেস্ট খেলতে নামা স্টার্ক। সেই শুরু। এক পর্যায়ে ১১ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে লজ্জাজনক অবস্থায় পরে ক্যারিবীয়রা। সেখান থেকে জাস্টিন গ্রিভস ১১ রান করলে নিউজিল্যান্ডের সর্বনিম্ন স্কোর ২৬ রান স্পর্শ করে। তখন মনে হচ্ছিল, ২০০৪ সালে এই মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৪৭ রানে অলআউটের রেকর্ডটিকে টপকে যাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু পেসার বোল্যান্ড সেই সুযোগ দেননি। বরং ১৪ নম্বর ওভারের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে গ্রিভস, শামার জোশেফ ও জোমেল ওয়ারিক্যানকে আউট করে হ্যাটট্রিক করেন। দিবা-রাত্রির টেস্টে এটাই প্রথম হ্যাটট্রিক। ২০১০ সালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্বশেষ হ্যাটট্রিক করেছিলেন পিটার সিডল। এ ছাড়া টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে বোল্যান্ডের আগে হ্যাটট্রিক করেছেন ভারতের জাসপ্রীত বুমরাহ, পাকিস্তানের নাসিম শাহ ও নোমান আলি, দক্ষিণ আফ্রিকার কেশব মহারাজ এবং ইংল্যান্ডের গাস অ্যাটকিনসন। বোল্যান্ডের স্পেল ঈর্ষণীয় ২-১-২-৩।
স্টার্ক ম্যাচসেরা হয়েছেন ক্যারিবীয়দের ইনিংস দুমড়েমুচড়ে দিয়ে। মাত্র ১৫ বলের মধ্যে ৫ উইকেট নিয়ে রেকর্ড গড়েন। তার বোলিং স্পেল ৭.৩-৪-৯-৬। আগে সবচেয়ে কম বলে ৫ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড ছিল তারই স্বদেশি আর্নি টোশাকের, ১৯৪৭ সালে ভারতের বিপক্ষে ১৯ বলে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লজ্জাজনক ২৭ রানে অলআউটের পর ওয়েস্ট ইণ্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড জরুরি বৈঠক ডেকেছে।