বিজয় যেন অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছেন আফঈদা-স্বপ্নারা। জাতীয় দল কিংবা বয়সভিত্তিক, সব খানেই অপ্রতিরোধ্য গতিতে ছুটে চলছেন বাংলাদেশের নারী ফুটবলাররা। রীতিমতো নারী ফুটবলের জয়জয়কার। সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে শ্রীলঙ্কা ও নেপালের পর ভুটানকে হারিয়ে টানা তৃতীয় জয়ে শিরোপার দিকে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। গতকাল কিংস অ্যারিনায় ও পরে প্র্যাকটিস গ্রাউন্ডে শান্তি মার্ডির হ্যাটট্রিকে ভুটানকে ৪-১ গোলে হারিয়েছেন আফঈদারা। মুনকি আক্তার করেন অপর গোলটি। আসরে দ্বিতীয় জয় পেতে মরিয়া ছিল ভুটান নারী দল, অন্যদিকে ভুটানকে হারিয়ে টেবিলে শীর্ষস্থান মজবুত করার লক্ষ্য ছিল জেমস পিটার বাটলারের দলের। সব বাধা উপক্ষো করে সেটাই করলেন আফঈদা-শান্তি-মুনকিরা। এ জয়ের মধ্য দিয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে বাংলাদেশ।
গতকাল সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হচ্ছিল। বাদ যায়নি রাজধানী ঢাকাও। বৃষ্টি হলেও নির্ধারিত সময়েই মাঠে গড়ায় বাংলাদেশ ও ভুটানের ম্যাচ। বসুন্ধরা কিংস অ্যারিনায় দুই দলের লড়াই শুরু হয় বেলা ৩টায়। তবে বৃষ্টির কারণে মাঠের লড়াই ছিল কঠিন। সেটা মাঠে নেমেই বুঝতে পারেন। এমন পরিস্থিতিতেও ম্যাচের প্রথমার্ধে ১-০ গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের হয়ে গোলটি করেন শান্তি মার্ডি। ম্যাচের ৭ মিনিটে দারুণ একটা সুযোগ কাজে লাগায় বাংলাদেশ। তৃষ্ণা রানীর শট ভুটানের গোলকিপার কোনোমতে থামালেও গ্লাভসবন্দি করতে পারেননি। ফিরতি শটে জালে জড়ান শান্তি মার্ডি।
ম্যাচের প্রথমার্ধের পর বৃষ্টির কারণে মাঠ খেলার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। দুই দফায় মাঠ পর্যবেক্ষণ করেন ম্যাচ কমিশনার। এ সময় মাঠ খেলার উপযোগী করা চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত বিকাল সাড়ে ৫টায় ভেন্যু পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়। বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটির কিংস অ্যারিনা থেকে প্র্যাকটিস গ্রাউন্ডে নেওয়া হয় ম্যাচের বাকি অর্ধেক খেলা। সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে শুরু হয় দ্বিতীয়ার্ধের লড়াই। নতুন মাঠে নেমেই প্রথম গোল করে ভুটান। ৫৩ মিনিটে সাঙ্গাই ওয়াংমুর একমাত্র গোলে সমতায় ফেরে ভুটান। তবে লিড নিতে বেশি সময় নেয়নি বাংলাদেশ। চার মিনিটের মাথায় নিজের দ্বিতীয় গোল করেন শান্তি। এরপর ৭৬ মিনিটে মধ্য মাঠ থেকে একাই বল নিয়ে ভুটানের জালে বল জড়ান মুনকি আক্তার। লাল-সবুজের হয়ে ৭৮ মিনিটে চতুর্থ ও নিজের হ্যাটট্রিক গোলটি করেন শান্তি। ডান দিক থেকে উমেলাহর বাড়ানো পাস থেকে গোল করেন তিনি। পরে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ হলেও শেষ পর্যন্ত জয়ের হাসি হাসে বাটলারের শিষ্যরা।
ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করা সাগরিকাকে পায়নি বাংলাদেশ। নেপাল ম্যাচে লাল কার্ড দেখা এ ফরোয়ার্ডকে ছাড়াই মাঠে নামেন বাটলারের মেয়েরা। শ্রীলঙ্কাকে ৯-১ গোলে হারানো এবং নেপালের বিপক্ষে ৩-২ ব্যবধানে জয়ের পর অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশকে থামাতে পারেনি ভুটানও। ২০২৩ সালে একবার ভুটানকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছিল বাংলাদেশ। সেবার বাংলাদেশের মেয়েরা শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়াতে দেয়নি ভুটানকে। এবারও তাই করল স্বাগতিকরা। ১৭ জুলাই আবার ভুটানের বিরুদ্ধে খেলতে নামবে বাংলাদেশ।