বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে প্রথম প্রবাসী ফুটবলার জামাল ভূঁইয়া। মাঠে মুগ্ধতা ছড়িয়ে ২০১৩ সালে জাতীয় দলে অভিষেক হয় তার। দেশের ফুটবলের দুর্দিনে তারকার খ্যাতি পেতে দেরিও হয়নি। জামাল শুধু প্রথম প্রবাসী নন। জাতীয় দলেও প্রথম প্রবাসী অধিনায়ক। দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সত্যি বলতে কি জামালের বিকল্পটা পূরণ হয়েছে হামজারা আসার পর। তারপরও তো অনায়াসে তার বেস্ট ইলেভেনে সুযোগ পাওয়ার কথা। মধ্য মাঠে তার জুড়ি নেই। অধিনায়ক হয়েও রিজার্ভ বেঞ্চে বসে থাকতে হচ্ছে। যা ফুটবলপ্রেমীদের বিস্মিত করছে। মাঝে মধ্যে জামালকে খেলানো হলেও বদলি হিসেবে নামানো হচ্ছে। অনেক দিন পর ভুটানের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে অধিনায়ক জামালকে শুরু থেকে নামানো হয়।
যতক্ষণ মাঠে ছিলেন সামর্থ্যর প্রমাণ দিয়েছিলেন। জামালের নিখুঁত কর্নার থেকে গোল করে বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখেন হামজা। ভুটানের বিপক্ষে যে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছিলেন তাতে ফুটবলপ্রেমীরা নিশ্চিত ছিলেন এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে শুরু থেকেই জামালকে মাঠে দেখা যাবে। অথচ সেদিন কোচ হাভিয়ের কাবরেরা অধিনায়ককে নামানোর প্রয়োজনই মনে করেননি। কোচের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। কিন্তু ফুটবলপ্রেমীরা মাঠে জামালের অভাব অনুভব করেছিল। একের পর এক যেভাবে কর্নার ও ফ্রি কিক পেয়েছিল তাতে জামাল থাকলে ফলাফল অন্যরকম হতে পারত। প্রশ্ন হচ্ছে নিয়মিত অধিনায়ককে কেন মাঠে নামানো হচ্ছে না। এ সিদ্ধান্ত কি শুধু হেড কোচেরই? নাকি অন্য কারোর নির্দেশনা আছে। এটা ঠিক জামালের আগের সেই চোখ ধাঁধানো পারফরম্যান্স নেই। তবে তিনি তো এমন পর্যায়ে যাননি খেলার যোগ্যতাই রাখেন না। যদি তাই হয় তাহলে কেনইবা চূড়ান্ত স্কোয়াডে রাখা হচ্ছে এবং অধিনায়কের দায়িত্বে রাখা হচ্ছে কেন? শুধু কি সংবাদ সম্মেলনে কথা বলার জন্যই নেতৃত্বে রাখা হচ্ছে?
বাফুফের সাবেক সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন নাকি কোচকে বলেছিলেন, যেভাবে হোক জামালই হবে দলের অধিনায়ক। কারণ সে ভালো ইংরেজি বলতে পারে। তাহলে সাবেক সভাপতির সেই নির্দেশনায় কি মানা হচ্ছে?
বাফুফে দেখছে জামালকে ঘিরে কতই না আলোচনা হচ্ছে। তারা কি বোঝেন না জামাল এখন অযোগ্য না যোগ্য? চূড়ান্ত দল গঠনে কর্মকর্তারা যদি কোনো হস্তক্ষেপ না করেন, তাহলে কি বিষয়টি নিয়ে কাবরেরার সঙ্গে বসা উচিত না? ম্যানেজমেন্ট কমিটির হস্তক্ষেপেই ইতালি প্রবাসী ফাহামিদুলের অভিষেক হয়েছে। জামালের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুটা দেখতে পারেন না। হতে পারে এ ক্ষেত্রে কোচের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। কিন্তু কাবরেরার দায়িত্ব পালন নিয়েই তো প্রশ্ন উঠছে। জানা গেছে, সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে খেলোয়াড় সিলেকশন নিয়ে হামজাও সন্তুষ্ট ছিলেন না। জামালের অভাব তিনিও অনুভব করেছেন। এরপরও কি বাফুফে নীরব থাকবে?