কঠিন পরিবেশে দীর্ঘমেয়াদি গবেষণার জন্য বিজ্ঞানীদের মানসিকভাবে প্রস্তুত করাই বড় চ্যালেঞ্জ। সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার সানাইভি রিসার্চ স্টেশনে সংঘর্ষ, হুমকি ও হয়রানির অভিযোগ উঠে এসেছে।এখানে ১৩ মাসের গবেষণা মিশনে অংশ নিতে হলে কঠোর মানসিক পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। দক্ষিণ আফ্রিকার পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের মতে, যারা বিচ্ছিন্ন পরিবেশ সহ্য করতে পারে এবং ছোট পরিসরে দলবদ্ধভাবে বসবাস ও কাজ করতে সক্ষম, শুধু তারাই নির্বাচিত হয়।
কেপটাউন থেকে প্রায় ২,৭০০ মাইল দূরে সানাইভি স্টেশনে এবার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। সেখানে শারীরিক আক্রমণ, যৌন হয়রানি ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে। দোষী ব্যক্তিদের ক্ষমাপ্রার্থনা সত্ত্বেও মানসিক চাপে ভুগছেন গবেষকরা। বর্তমানে মনোবিজ্ঞানীরা তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন এবং সংকট সমাধানের চেষ্টা চালাচ্ছেন।
এই অভিযোগ প্রথম সামনে আসে দক্ষিণ আফ্রিকার সানডে টাইমস পত্রিকার মাধ্যমে। এক গবেষক তার সহকর্মীর বিরুদ্ধে 'ভীতিকর ও দমনমূলক পরিবেশ' তৈরির অভিযোগ আনেন। অ্যান্টার্কটিকার গবেষণাগারগুলোতে বিজ্ঞানীরা প্রায় পুরো শীত মৌসুমে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকেন। তবে প্রাথমিক উত্তেজনা কাটিয়ে দলগতভাবে কাজ করার দক্ষতা অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
১৯৯৯ সালে এই স্টেশনে কাজ করা বিজ্ঞানী নীল মালান বলেন, শুরুতে কিছু মানসিক চাপ থাকলেও বেশিরভাগ দল একসঙ্গে মানিয়ে নেয়। আমরাও আমাদের মতপার্থক্য কাটিয়ে উঠেছিলাম।"এই ঘটনা শুধু অ্যান্টার্কটিকা নয়, ভবিষ্যতের মঙ্গল গ্রহ অভিযানেও সতর্কবার্তা হিসেবে ধরা হচ্ছে।
২০১০-১১ সালে ৫২০ দিনের ‘মার্স৫০০’ মিশনে ছয়জন বিজ্ঞানী বিচ্ছিন্ন পরিবেশে ছিলেন। তারা সফলভাবে এই পরীক্ষা শেষ করলেও, আগের এক গবেষণায় এক নারী বিজ্ঞানী সহকর্মীর দ্বারা হয়রানির অভিযোগ তুলেছিলেন।বিজ্ঞানীরা বলছেন, যেকোনো বিচ্ছিন্ন কর্মস্থলে সহাবস্থান রক্ষা করাই মূল চ্যালেঞ্জ। তা অ্যান্টার্কটিকা হোক বা মহাকাশ স্টেশন।
বিডি প্রতিদিন/কবিরুল