আগামী ছয় মাসের মধ্যে বরিশাল শিশু হাসপাতাল চালু করার পরিকল্পনা নিয়েছেন শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক। কিন্তু হাসপাতাল নির্মাণকাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও গণপূর্ত দপ্তর জানে না কবে নাগাদ হস্তান্তর করা যাবে হাসপাতালটি। নির্মাণসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, শিশু হাসপাতালের নির্মাণকাজের ফান্ড ক্লোজ করা হয়েছে। ফান্ড না থাকলে কাজ করে আমরা কী করব। জানা গেছে, নগরীর আমানতগঞ্জ এলাকায় বক্ষব্যাধি হাসপাতালের পাশে ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি বরিশাল শিশু হাসপাতালের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নে ২০০ শয্যাবিশিষ্ট এ হাসপাতাল ভবন নির্মাণকাজের ঠিকাদার সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টুর প্রতিষ্ঠান। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার দেবাশিষ সাহা বলেন, তাদের ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। এখন শুধু একটু রং করা, সোলার বসানোর কাজ বাকি রয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে এ কাজ শেষ করা যাবে। দুই মাস পূর্বে হাসপাতালের ভবন বুঝে নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা কোনো সদুত্তর দেয়নি। দেবাশিষ সাহা বলেন, হাসপাতালের বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কাজ করছে অন্য একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। হাসপাতালের ফান্ড বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাবস্টেশন ও জেনারেটর স্থাপনসহ বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজ করছে না।
এ বিষয়ে বরিশাল গণপূর্ত দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফয়সাল আলম বলেন, শিশু হাসপাতালের বৈদ্যুতিক কাজ বাকি রয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য কাজ শেষ হয়েছে। সাবস্টেশন ও জেনারেটরের বরাদ্দ নেই। বরাদ্দ পেলে কাজ সম্পন্ন করা হবে। এতে হাসপাতালের সম্পূর্ণ কাজ শেষ হবে।
সাবস্টেশন ও জেনারেটর ছাড়া প্রত্যাশী সংস্থার কাছে ভবন বুঝে নেওয়ার জন্য চিঠি লিখেছিলাম। বিদ্যুৎ ছাড়া তারা ভবনটি বুঝে নেবে না। এ ছাড়াও প্রয়োজনীয় জনবল না থাকার কারণে বুঝে নিচ্ছে না। নির্বাহী প্রকৌশলী আরও বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানও আমাদের চিঠি দিয়েছে। যে এলাকাটিতে হাসপাতালটির অবস্থান সেখানে মাদকসেবীদের আখড়া। হাসপাতালের বিভিন্ন ফিটিংস চুরি হয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও আমরা (গণপূর্ত) বিব্রতকর অবস্থায় আছি। বরাদ্দ কবে নাগাদ আসতে পারে, সেই বিষয়ে কোনো ধারণা দিতে পারেননি নির্বাহী প্রকৌশলী। ১০ তলা ভিত্তির ওপর চার তলা এ হাসপাতালের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ২৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা। ১৭ হাজার ৭৫০ বর্গফুটের এ হাসপাতালের প্রথম তলায় থাকবে জরুরি, রেডিওলজি, ডায়াগনস্টিক ও ওষুধ সরবরাহ বিভাগ। দ্বিতীয় তলায় থাকবে আউট ডোর পেসেন্ট ডিপার্টমেন্ট, থেরাপি, ডায়াগনস্টিক ও প্যাথলজি বিভাগ। তৃতীয় তলায় থাকবে নিউনেটাল আইসিইউ, অপারেশন ব্লক, কনফারেন্স রুম, অপারেশন পরবর্তী সেবা ব্লক। চতুর্থ তলায় থাকবে প্রশাসনিক ব্লক, সাধারণ শিশু ওয়ার্ড, নিউনেটাল কেয়ার ইউনিট, ক্যান্টিন, অপারেশন ব্লক ও কনফারেন্স রুম।