সুন্দরবনের দুবলার চরে শুরু হয়েছে ঐতিহাসিক রাস উৎসব। সোমবার সন্ধ্যা থেকে উৎসবটি চলবে তিনদিন।
বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দররবনের শরণখোলা রেঞ্জে বঙ্গোপসাগর তীরে এই দুবলার চর। এখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের এই উৎসব উদযাপিত হয়ে আসছে প্রায় ২০০ বছর ধরে।
রাস পূর্ণিমার তিথিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সনাতনীরা মনের আশা পূরণের আশায় সেখানে রাধা-কৃষ্ণের মন্দিরে পূজা-অর্চনা ও মানতের ভোগ উৎসর্গ করবেন। বুধবার ভোরে সাগরের প্রথম জোয়ারে পানিতে স্নানের মধ্যদিয়ে শেষ হবে রাস উৎসব।
সুন্দরবন বিভাগ জানিয়েছে, এ বছর রাস পূজাকে ঘিরে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। শুধু সনাতন ধর্মাবলম্বী পুণ্যার্থী ছাড়া কোনো টুরিস্ট বা মুসলিম ধর্মের কাউকে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। এজন্য ২৭ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত জেলে, পর্যটক ও সাধারণের প্রবেশে অনুমতি বন্ধ রাখা হয়েছে।
বনের প্রাকৃতিক পরিবেশ সুরক্ষা, হরিণ শিকার ও প্লাস্টিক বর্জ্য দূষণরোধে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পুণ্যার্থীদের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে পাঁচটি নৌপথ। উৎসবকে কেন্দ্র করে বনবিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
দুবলার চরের রাস উৎসব উদযাপন কমিটির সভাপতি ও দুবলা ফিশারমেন গ্রুপের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, আলোরকোলে রাধা-কৃষ্ণের অস্থায়ী মন্দির নির্মাণ করা হয়েছে। উৎসব ঘিরে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধে কমিটি সতর্ক রয়েছে।
বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, রাস পূজায় ট্যুরিস্টদের নেওয়ার জন্যও কোনো ট্যুর অপারেটকেও অনুমতি দেওয়া হয়নি। নিরাপত্তার জন্য সুন্দরবনের প্রবেশমুখ, বনের ভেতরে ও নির্ধারিত রুটগুলোতে কোস্টগার্ড ও বনবিভাগের সদস্যরা নিয়োজিত থাকবেন।
তিনি আরও বলেন, বিগত বছরগুলোতে রাস উৎসবে অবাধ যাতায়াতের কারণে পুণ্যার্থীদের ছদ্মবেশে হরিণ শিকারিরা প্রবেশ করতো। এছাড়া ব্যাপক লোকসমাগমে প্লাস্টিক দূষণসহ সংরক্ষিত বনের পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল।
বিডি-প্রতিদিন/এমই