রাজধানীর উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তে নিহত পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলামের জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ঘাঁটি বীর উত্তম এ কে খন্দকার প্যারেড গ্রাউন্ডে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন, সহকারী নৌবাহিনী প্রধান (পরিচালন) ও নিহতের পরিবার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে নিহত পাইলট তৌকির ইসলামের ফিউনারেল প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়। এটি হলো সামরিক বা আনুষ্ঠানিক বিদায় সংবর্ধনা। সাধারণত কোনো সামরিক কর্মকর্তার মৃত্যুর পর এটি অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানাজার আগে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলামের মামা মোহাম্মদ আলী কথা বলেন। পরে তাঁর কফিনে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়। জানাজা শেষে দুপুরেই তাঁর লাশ বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে নেওয়া হয় রাজশাহীতে।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, ফিউনারেল প্যারেড শেষে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলামকে রাজশাহীতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
এদিকে, নিহত ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগরকে রাজশাহীতে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে। গতকাল বিকালে নগরীর সপুরা গোরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়। এর আগে বিকাল সাড়ে ৪টায় জেলা মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ, রাজশাহী মহানগর পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান, সাবেক সিটি মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলসহ সেনা ও বিমানবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, আত্মীয়স্বজন এবং সাধারণ মুসল্লিরা অংশ নেন।
তৌকির ইসলামের বাবা তহুরুল ইসলাম একজন ব্যবসায়ী। তাঁর বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে। তবে প্রায় ৩০ বছর ধরে তিনি রাজশাহী শহরে বাস করেন। তার একমাত্র ছেলে তৌকিরের বেড়ে ওঠা রাজশাহীতেই। তৌকির রাজশাহীর ল্যাবরেটরি স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে পাবনা ক্যাডেট কলেজে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন। ২০১৪ সালে এসএসসি ও ২০১৬ সালে এইচএসসি পাস করে তিনি বিমানবাহিনীতে যোগ দেন।