ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলার ১২ বছর বয়সী স্কুলশিক্ষার্থী উক্যছাইং মারমার। এই মর্মান্তিক মৃত্যুতে পাহাড়জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে, থামছে না কান্না।
উক্যছাইং রাজস্থলীর বাঙালহালিয়া ইউনিয়নের কলেজ পাড়া এলাকার বাসিন্দা উসাইমং মারমা ও তেজিপ্রু মারমার একমাত্র সন্তান। সপ্তম শ্রেণির এই শিক্ষার্থী স্বপ্ন দেখত বড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হবে। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাবা-মা তাকে ঢাকায় পাঠিয়েছিলেন উচ্চশিক্ষার জন্য। ভর্তি করান রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে। ঢাকায় খালার বাসায় থেকে পড়ালেখা করছিল সে। কিন্তু হঠাৎ করেই সব স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয়ে গেল বিমান বিধ্বস্তের সেই বিভীষিকাময় ঘটনায়।
উক্যছাইংয়ের মা তেজিপ্রু মারমা বলেন, 'ঘটনার দিন আমরা রাঙামাটিতে ছিলাম। টিভিতে খবর দেখে মনে হলো, আমাদের কলিজার টুকরাকে কিছু একটা হয়ে গেছে। সঙ্গে সঙ্গে ঢাকার পথে রওনা দিলাম। পথে বারবার প্রার্থনা করছিলাম, আমার ছেলে যেন সুস্থ থাকে। কিন্তু হাসপাতালে গিয়ে দেখি... আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।'
বাবা উসাইমং মারমা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, 'আমার একটাই সন্তান ছিল। তাকে ঘিরেই সব স্বপ্ন, সব আশা। এখন আমি কী নিয়ে বাঁচবো? কেন এমন হলো আমার ছেলেটার সঙ্গে?' বারবার কথা বলতে বলতে তিনি মূর্ছা যাচ্ছিলেন। চারপাশে কান্নার রোল পড়ে যায়।
গত মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে লাশবাহী গাড়িতে করে নিজ গ্রামে আনা হয় উক্যছাইংয়ের মরদেহ। নিথর দেহ দেখে আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
আজ বুধবার দুপুর দেড়টায় ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান শেষে পারিবারিক শ্মশানে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়। এতে অংশ নেন শতাধিক স্থানীয় মানুষ। সবাই শোকে স্তব্ধ, শোকবিহ্বল পরিবারের পাশে দাঁড়াতে এসেছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/মুসা