‘হযবরল’ অবস্থা চলছে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন দপ্তরে। বছরের পর বছর মাস্টার হিয়ারিংয়ের অপেক্ষায় থাকা রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী আবেদনকারীরা মাসখানেকের মধ্যে শুনানির তারিখ পাচ্ছেন। দ্রুত সে আবেদন নিষ্পত্তির তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। এতে বড় রকমের অস্বস্তিতে পড়েছেন আবেদনকারীরা।
এ বিষয়ে নিউইয়র্ক অঞ্চলে অভিবাসন ইস্যুতে খ্যাতি অর্জনকারী অ্যাটর্নি জান্নাতুল রুমা বলেন, ‘আবেদন প্রেরণের পর এমন নোটিস দেখে আমি হতবাক। আমার ক্লায়েন্টেরও প্রস্তুতি ছিল না। তবু শুনানিতে সাড়া দিতে হয়েছে। সিদ্ধান্ত এখনো পাইনি। এমন পরিস্থিতি সবার জন্যই বিব্রতকর। তাই রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করতে আগ্রহীদের উচিত হবে সব তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের পরই তা সাবমিট করা। তাহলে যত দ্রুততম সময়েই ইন্টারভিউর তারিখ দেওয়া হোক না কেন, তাতে সমস্যা হবে না।’
অ্যাটর্নি রুমা বলেন, ‘সচরাচর অ্যাসাইলামের আবেদন দাখিলের পাঁচ মাস পর ওয়ার্ক পারমিট আসে। এরপর ইন্টারভিউর জন্য অপেক্ষার পালা। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একের পর এক নয়া নির্দেশনায় সবকিছু হযবরল অবস্থায় পড়েছে। এতে ক্লায়েন্টরা যেমন স্বস্তিতে নেই, আমরা অ্যাটর্নিরাও অস্বস্তিতে পড়েছি।’ প্রাপ্ত অভিযোগ অনুযায়ী, এখন স্টুডেন্ট ভিসাধারীরাও স্বস্তিতে নেই। কারণ পূর্বসতর্কতা ছাড়াই অনেকের ভিসা বাতিল করা হচ্ছে। কয়েক বছর আগে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন কিংবা দোকানে ছোটখাটো চুরির জন্য গ্রেপ্তার হয়েছিলেন কিংবা টিকিট না করেই বাস/রেল স্টেশনে ঢুকেছিলেন এমন মামুলি অপরাধ থেকে পরে খালাস পেলেও এখন তা বড় ধরনের বিপত্তির কারণ হচ্ছে। অ্যাটর্নি রুমা বলেন, ‘স্টুডেন্ট ভিসাধারীরা কেউ স্বস্তিতে নেই ট্রাম্পের গৃহীত কঠিন পদক্ষেপের কারণে। এর মধ্যেই অনেকের ভিসা বাতিল করা হয়েছে। অনেকে ভিসার নিয়ম লঙ্ঘন করে গোপনে কাজ করছেন এবং তা থেকেই ছোটখাটো অপরাধে জড়িত হচ্ছেন। এগুলো আগে কেউ খতিয়ে দেখেননি। এখন ট্রাম্প প্রশাসন অজুহাত খুঁজছে ভিসা বাতিলে।’
ন্যাশনাল ডে অব অ্যাকশন : এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী অভিযানসহ নানা পদক্ষেপের প্রতিবাদে আজ শনিবার নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন ডিসি, ক্যালিফোর্নিয়া, পেনসিলভেনিয়া, নিউজার্সি, ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, মিশিগান, টেক্সাসসহ ৫ স্টেটের সহস্রাধিক সিটিতে বিক্ষোভ সমাবেশ হবে। অর্থাৎ ৫০ স্টেটের ৫০ বড় সিটিসহ ৪ শতাধিক স্থানে এ দিন বিক্ষোভ হবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের গণবিরোধী পদক্ষেপ রুখে দিতে। দেশব্যাপী ‘ন্যাশনাল ডে অব অ্যাকশন’ শীর্ষক এ কর্মসূচির প্রতি সর্বসাধারণের আগ্রহ ক্রমান্বয়ে বাড়ছে বলে আয়োজকরা দাবি করেছেন।