চট্টগ্রামে দুর্দিন চলছে তৈরি পোশাক খাতে। গত ছয় মাসে বিদেশি কাজের আদেশ কমেছে প্রায় ২৫ শতাংশ। এই সময়ে নতুন করে বন্ধ হয়েছে ৫২ কারখানা। বেকার হয়ে পড়েছে হাজার হাজার শ্রমিক। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সংশ্লিষ্টদের দাবি, উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি, আমলাতান্ত্রিক জটিলতাসহ নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে ব্যবসা সংকোচন করছেন ব্যবসায়ীরা। বিজিএমইএর প্রশাসক কমিটির সদস্য ও ক্লিফটন গ্রুপের পরিচালক এমডিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, পোশাকের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় কারখানা মালিকদের ব্যবসা করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। পদে পদে হয়রানি, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং কাঁচামাল আমদানিতে প্রতিবন্ধকতা। সব মিলিয়ে প্রতিষ্ঠান চালাতে হিমশিত খেতে হচ্ছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কারখানা বন্ধ করে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
বিজিএমইএর দেওয়া তথ্য মতে, চট্টগ্রামে নিবন্ধিত পোশাক কারখানা রয়েছে ৬১১টি। চালু রয়েছে ৩৫০টি। বর্তমানে বন্ধ রয়েছে ২৬১টি। গত ছয় মাসে বন্ধ হয়েছে ৫২টি। বাকি ২০৯টি কারখানা দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। চালু থাকা কারখানাগুলোর মধ্যে ১৮০টি বিদেশি ক্রয়াদেশ নিয়ে কাজ করছে। বাকিগুলো ক্রয়াদেশ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে চুক্তিভিত্তিক কাজ করছে। পোশাক কারখানার মালিকরা জানিয়েছেন, গত ছয় মাসে চট্টগ্রামের পোশাক কারখানাগুলোর কাজের আদেশ কমেছে প্রায় ২৫ শতাংশ। জানা যায়, কয়েক বছর ধরে ধুঁকছে পোশাক শিল্প। আগস্টে পট পরিবর্তনের পর জ্বালানি ও ডলার সংকটসহ নানা কারণে পরিস্থিতি জটিল হয়। ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদহার, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে কাঁচামাল আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ-গ্যাস ট্যারিফ বৃদ্ধি, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ না হওয়ায় গণ হারে চাঁদাবাজি, যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানিতে মাত্রাতিরিক্ত শুল্ক, কারখানা মালিকদের হয়রানি এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। তার ওপর যুক্ত হয়েছে প্রধান আমদানিকারক দেশগুলোর পোশাকের দাম কমানো। ফলে ব্যবসা পরিচালনা করতে হিমশিম খাওয়া ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ করছেন ব্যবসা সংকোচন। কেউ হাঁটছেন ব্যবসা বন্ধের পথে।