দুটি পায়ের একটি নেই। এ অবস্থায় বেয়ারিং দিয়ে গাড়ি বানিয়ে বিভিন্ন স্থানে ইট ভেঙে সংসার চালান প্রতিবন্ধী আবুল কাশেম (৪৭)। জন্মের কয়েক মাসের মধ্যে অগ্নিদুর্ঘটনায় ডান পা পুড়ে যায় তার। এরপর শত চেষ্টায়ও পঙ্গুত্ব থেকে রক্ষা পাননি তিনি। তবু থেমে নেই জীবন। বেয়ারিংয়ের তৈরি গাড়ি ও দুটি হাতের সাহায্য নিয়ে চলছে তার জীবন-জীবিকা। তবে স্থানীয় ও পরিবারের স্বজনরা সরকারি সহযোগিতার দাবি জানিয়েছেন।
জানা যায়, ঠাকুরগাঁও পীরগঞ্জ উপজেলার পৌর শহরের ভেলাতৈড় এলাকার বাসিন্দা আবুল কাশেম। জন্ম ১৯৭৮ সালে। জন্মের কিছুদিনের মধ্যে আগুনে ডান পা পুড়ে গেলে চিন্তায় পড়ে তার পরিবার। শত চেষ্টায়ও পুরোপুরি সুস্থ হতে পাড়েনি কাশেম। পঙ্গুত্ব নিয়েই দীর্ঘদিন ছেলেকে যত্ন করে রাখার পরে অবশেষে বিয়ে দেওয়া হয় কাশেমকে। এরপর থেকে নিজের ও নিজের স্ত্রীর কথা ভেবে কাজের সন্ধানে বেড়িয়ে পড়েন কাশেম। পঙ্গুত্ব নিয়েই জীবিকার তাগিদে কাজের সন্ধানে বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে বেড়ান। একপর্যায়ে ২০১১ সাল থেকেই ইট ভাঙার কাজে লেগে যান।
পঙ্গুত্বের সঙ্গে জীবনযুদ্ধে সঙ্গী তার একমাত্র বিয়ারিং গাড়ি। প্রতিদিন সকালে এ বিয়ারিং গাড়িতে বসে দুই হাতের সাহায্যে ছুটে বেড়ান পুরো শহর। খুঁজে বেড়ান কাজ। কপাল ভালো হলে মাঝেমধ্যে ইট ভাঙার কাজ জোটে। আয় করেন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। বর্তমানে কাশেমের পরিবারে রয়েছে স্ত্রী ও তিন সন্তান। সন্তানদের পড়াশোনাও করাচ্ছেন।
কাশেমের জীবনযুদ্ধ প্রসঙ্গে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা বলেন, ‘কাশেম আমাদের সমাজের একটা বড় উদাহরণ। সমস্যা নিয়েই তিনি জীবনের সঙ্গে লড়াই করছেন। এ থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া দরকার। কর্মের কোনো বিকল্প নেই, এটা কাশেমকে দেখে শিক্ষা নেওয়া দরকার। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যতদূর সম্ভব তাকে সাহায্য করার চেষ্টা করব।’