ডিম ফল। ইংরেজিতে এগ ফ্রুট। দেখতে ডিমের মতো। স্বাদে-গন্ধেও পুরাই ডিম। কৃষি বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা বলছেন, এ ফল ভিটামিন, মিনারেল ও ঔষধি গুণসমৃদ্ধ। সাধারণত এ ফল দক্ষিণ মেক্সিকো এবং মধ্য আমেরিকা অঞ্চলে রয়েছে। বাংলাদেশের রাঙামাটিতে এ ফলের প্রথম আবাদ সম্ভব হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। পার্বত্যাঞ্চলে ডিম ফলের চারা কৃষকদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হলে সম্ভাবনার দ্বার খুলবে। এমনটিই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে দেশে প্রথমবার উদ্ভাবিত ডিম ফলটি কৃষিতে নতুন আশার আলো দেখাচ্ছে। পাঁচ বছর ধরে গবেষণা করে পাহাড়ি গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা সফলতা পেয়েছেন। তিনি আরও জানান, ডিম ফলের ওজন গড়ে ১৯০ থেকে ২০০ গ্রাম হয়ে থাকে। পাকা ডিম ফল প্রায় ৮০ থেকে ৮২ ভাগ খাওয়ার যোগ্য। সুস্বাদু ও মিষ্টি। এ ফলটি প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে কেক, চকলেট, পনির, জুস এবং আইসক্রিমসহ বিভিন্ন খাবার তৈরি করা সম্ভব। উচ্চমাত্রায় পুষ্টি গুণসমৃদ্ধ উদ্ভাবিত এ ডিম ফলটি পাহাড়ে চাষ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হলে একদিকে কৃষির অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে অন্যদিকে কৃষকরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে রাঙামাটি কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী ইউনিয়নে কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে প্রথম ডিম ফলের চারা রোপণ করা হয় পরীক্ষামূলকভাবে। এর চার বছর পর আবারও দেশের বাইরে থেকে চারা সংগ্রহ করে গবেষণা শুরু করেন কৃষি বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা। বড় হতে থাকে ডিম ফল গাছ। চার থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে ফুল আসতে শুরু করে। ফলনও হয় বাম্পার। গাছের বংশবিস্তারের জন্য বীজ থেকে চারা ও গ্রাফটিং বা কলম পদ্ধতির মাধ্যমে চারা উৎপাদনে সফলতা পান কৃষি কর্মকর্তারা। চার থেকে পাঁচ বছরে একটি গাছে গড়ে ৪৫০ থেকে ৫০০টি ফল পাওয়া যাচ্ছে।