বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)-এর সঙ্গে কোনো পরামর্শ ছাড়াই বিদ্যুৎ খাতের প্রচুর প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এগুলোর ক্যাপাসিটি চার্জ দিচ্ছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। আইন অনুযায়ী এসব প্রকল্প বাস্তবায়নকারীদের বিইআরসির সঙ্গে পরামর্শ করার কথা। যে কোনো কারণে বিইআরসি এ দায়িত্ব পালন করতে পারেনি বা সুযোগ আসেনি। কিন্তু এখন থেকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির প্রকল্প বাস্তবায়নে বিইআরসির অনুমোদন লাগবে। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে টিসিবি ভবনে ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মশালায় বিইআরসি চেয়াপরম্যান জালাল আহমেদ এসব কথা বলেন।
বিইআরসি চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের এ কমিশন প্রথমবারের মতো একটি চিঠি বিদ্যুৎ বিভাগকে দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে এখন থেকে যে কোনো প্রকল্প গ্রহণের আগে বিইআরসির অনুমোদন নিতে হবে। বিদ্যুৎ ও গ্যাস দুই বিভাগেই এ বিষয়ে আলাদা করে চিঠি পাঠানো হবে। যাতে যে কোনো প্রকল্প গ্রহণের আগে এখন থেকে বিইআরসির অনুমোদন নেয়। এতে বিইআরসির ওপর দায় অনেকখানি চলে আসবে। এখানে প্রশ্ন আসবে-এ বিষয়ে বিইআরসির সামর্থ্য ও কারিগরি দক্ষতা আছে কি না। উত্তরে বলতে চাই, সামর্থ্য না থাকলে প্রকল্প মূল্যায়ন করার বিষয় আসে না।
এলপিজির মূল্য নির্ধারণে প্রাইসিং ফর্মুলায় ত্রুটি আছে কি না-এমন প্রশ্নের উত্তরে বিইআরসি চেয়ারম্যান বলেন, যখন কোর্ট বিইআরসিকে মূল্য নির্ধারণের দায়িত্ব দেন তখন বিইআরসি দুবার গণশুনানি করে। সেখানে একটি ফর্মুলা ঠিক করা হয়। উৎপাদনকারীদের জন্য একটি ফিক্সড মূল্য ধরা আছে। তাদের বক্তব্য এ মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা তাদের সঙ্গে বসে এ নিয়ে আলোচনা করব।
শিল্পে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব নিয়ে তিনি বলেন, যেহেতু আমদানিকৃত তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) দিয়ে চাহিদার বিরাট একটি অংশ পূরণ করা হবে। আবার নতুন করে দেশে গ্যাসের উৎপাদন শিগগিরই সম্ভব না।
আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে স্থানীয়ভাবেও যে গ্যাসের বাড়তি জোগান যুক্ত করা যাবে সে সম্ভাবনাও নেই। নতুন করে কূপ আবিষ্কার না করলে স্থানীয় উৎসের ওপর খুব একটা ভরসা রাখতে পারব না। গ্যাস উন্নয়ন তহবিলের অর্থ যদি সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধানে ব্যবহৃত হতো তাহলে এতদিনে সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রমের গতি বাড়ত।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ১৬টি তরল জ্বালানির দাম নির্ধারণ করে। পেট্রল, অকটেন ও ডিজেলের দাম নির্ধারণ করে সরকার। কিন্তু সামনে থেকে বিপিসি আর কোনো জ্বালানির দাম নির্ধারণ করতে পারবে না।