কয়েক দশকের মধ্যে আগামী বছর সবচেয়ে তীব্র খরার মুখে পড়তে যাচ্ছে ইংল্যান্ড। এ আশঙ্কায় ইতোমধ্যে দেশটির সরকার ও পানি কোম্পানিগুলো জরুরি পরিকল্পনা শুরু করেছে।
দেশটির আবহাওয়া দপ্তর গড় বৃষ্টিপাতের চেয়ে কম বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে পানি ব্যবহারের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ জরুরি হয়ে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন তারা।
ইংল্যান্ডের একটি প্রধান পানি সরবরাহ প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীরা গার্ডিয়ানকে জানান, শীতকালে গড় বৃষ্টিপাতের চেয়ে কম বৃষ্টিপাতের শঙ্কা নিয়ে তারা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।
যদিও খরা হঠাৎ করেই আবির্ভাব হয় না। তবে খরার কবলে পড়ার বেশকিছু উপসর্গ ইতোমধ্যে দেখা দিয়েছে। চলতি বছর গ্রীষ্মে ইংল্যান্ডের বেশিরভাগ অংশ পানি সংকটে ভুগেছে। ইংল্যান্ডের বড় অংশে পাইপলাইন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারত। কিন্তু আগের বছর শরৎ ও শীতকালে বৃষ্টি হওয়ায় শঙ্কা অনুযায়ী খারাপ হয়নি। যার ফলে জলাধারগুলো পানিতে পূর্ণ ছিল। ভূগর্ভেও পানি জমা হয়েছিল।
তবে গত কয়েক মাসের রেকর্ড শুষ্ক আবহাওয়া পানির সেই মজুত শেষ করে দিয়েছে। সাম্প্রতিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণও আশানুরূপ হয়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় জলাধারে পানির সঞ্চয় প্রায় ৬৩ শতাংশে নেমে এসেছে। যা মৌসুমি গড় ৭৬ শতাংশ থাকা দরকার ছিল। দক্ষিণ ইংল্যান্ডের কিছু জলাধারে ৩০ শতাংশেরও নিচে নেমে গেছে।
ইংল্যান্ডের পানি বিষয়ক মন্ত্রী এমা হার্ডি বলেন, সমস্ত অঞ্চলে নিবিড় নজর রাখছি। সরবরাহ বজায় রাখতে জাতীয় খরা গ্রুপ ও পানি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে কাজ করছি। সরকার দীর্ঘমেয়াদি পানি সরবরাহ নিশ্চিতে নতুন জলাধারের উন্নয়নসহ জরুরি পদক্ষেপ নিচ্ছে।
চার্টার্ড ইনস্টিটিউশন অফ ওয়াটার অ্যান্ড ইনভাইরনমেন্টাল ম্যানেজমেন্টের কর্মকর্তা অ্যালাস্টার চিশলম বলেছেন, আগামী বসন্ত ও গ্রীষ্মে শুষ্ক আবহাওয়ার অর্থ আরও খরা হবে।
ইংল্যান্ডের এ অবস্থার বিষয়ে তিনি বলেন, ক্রমেই জনসংখ্যা বাড়ছে, গরম ও শুষ্ক গ্রীষ্মের সময়কালও বেশি হচ্ছে। এছাড়া ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কোনও নতুন বড় জলাধার তৈরি হয়নি।
চিশলম পরামর্শ দেন, শুধু নতুন জলাধার নির্মাণ যথেষ্ট নয়। ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়ির জন্যও নিজস্ব জলাধারের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, আনাদোলু এজেন্সি
বিডি-প্রতিদিন/এম