টানা ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে মেক্সিকোর দক্ষিণ-পূর্ব ও মধ্যাঞ্চলে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪১ জনে। দুর্গত এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষকে উদ্ধারে কাজ করছে সেনাবাহিনী। এখনো অন্তত ২৭ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
সবচেয়ে ভয়াবহ চিত্র দেখা গেছে ভেরাক্রুজ রাজ্যের তেলসমৃদ্ধ শহর পোজা রিকায়। শহরের নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারী শ্রমজীবী মানুষদের অনেকেই পানির ঢল দেখার আগেই শুনতে পেয়েছিলেন বন্যার আগমনী শব্দ। বিশেষ করে যখন গাড়িগুলো কাজোনেস নদীর তীর থেকে বেরিয়ে আসা পানির স্রোতে ধাক্কা খেয়ে ভেসে যাচ্ছিল। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) ভোরে হঠাৎ নদীর পানি বেড়ে গিয়ে ১২ ফুট (৪ মিটার) উঁচু ঢলে রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। শনিবার সকালে পানি নামলেও শহরে রয়ে যায় শুধুই ধ্বংসস্তূপ।
রাস্তায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা গাড়ি, গাছের মাথায় ঝুলে থাকা যানবাহন, এমনকি একটি পিকআপ ট্রাকের ভেতরে পাওয়া যায় একটি মৃত ঘোড়া- সবই প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়াবহতা প্রকাশ করে। বিপৎসংকেত না থাকায় সময় মতো সতর্কতা পায়নি অনেকে, তবে কিছু বাসিন্দা কয়েক ঘণ্টা আগে পানি আসার আভাস পেয়ে ঘর ছাড়েন। ভূমিধস ও জলাবদ্ধতায় মেক্সিকোজুড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে ৩ লক্ষাধিক ব্যবহারকারীর। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ ফেরেনি এখনো।
পোজা রিকার কালো কর্দমাক্ত রাস্তাগুলোয় ভারী যন্ত্রপাতির শব্দে মুখর হয়ে ওঠে রাত নামতেই। বিদ্যুৎ বা সেনাবাহিনীর উপস্থিতি না থাকলেও স্থানীয়রা নিজ নিজ বাসা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিষ্কার করতে মরিয়া হয়ে কাজ করছিল। কর্তৃপক্ষ জানায়, এই দুর্যোগের মূল কারণ ক্রান্তীয় ঝড় প্রিসিলা এবং মেক্সিকোর পশ্চিম উপকূলে অবস্থানরত আরেকটি ঝড় রেমন্ড। প্রিসিলা পূর্বে একটি হারিকেন ছিল, যা এখন ডেকে আনছে ভারি বৃষ্টিপাত ও দুর্যোগ।
সরকার জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সহায়তা পৌঁছাতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এরই মধ্যে উদ্ধার সরঞ্জাম ও যানবাহন সেখানে পাঠানো হয়েছে। গৃহহীন লোকজনের জন্য আশ্রয়কেন্দ্রও খোলা হয়েছে। সূত্র: এপি নিউজ, নিউ ইয়র্ক টাইমস
বিডি প্রতিদিন/এএম