ভারতের জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর জন্মবার্ষিকী গান্ধী জয়ন্তী এবং জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক অহিংসা দিবসের মাত্র কয়েক দিন আগে লন্ডনে ভারতের তার মূর্তি ভাঙচুর করা হয়েছে। ভারত-বিরোধী স্লোগান লেখার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানালো ভারত। লন্ডনে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশন এই ঘটনাকে শুধু ভাঙচুর নয় অহিংসার আদর্শের উপর সহিংস আক্রমণ বলে অভিহিত করেছে।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের কাছাকাছি ঐতিহাসিক ট্যাভিস্টক স্কোয়ারে মহাত্মা গান্ধীর এই প্রতীকী ব্রোঞ্জ মূর্তিটি রাতের অন্ধকারে বিকৃত করা হয়। মূর্তির বেদি ও সিঁড়িতে স্প্রে করে ইংরেজিতে লেখা হয় গান্ধী-মোদি হিন্দুস্তানি টেররিস্ট-এর মতো মন্তব্য। এই ঘটনার খবর প্রকাশ্যে আসতেই লন্ডন ও নয়াদিল্লিতে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে লন্ডনের ভারতীয় হাই কমিশন এক্স (পূর্বে টুইটার) প্ল্যাটফর্মে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে। বিবৃতিতে বলা হয়, মহাত্মা গান্ধীর মূর্তির এই লজ্জাজনক ভাঙচুরের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। এটি শুধু ভাঙচুর নয়, আন্তর্জাতিক অহিংসা দিবসের মাত্র তিন দিন আগে অহিংসার ধারণা এবং মহাত্মার উত্তরাধিকারের উপর এক সহিংস আক্রমণ।
হাইকমিশন আরও জানায়, তারা এই বিষয়টি নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপের জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছে। এছাড়াও ভারতীয় দূতাবাসের একটি দল ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে মূর্তির পুরনো মর্যাদা পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু করেছে।
ভাস্কর ফ্রেড্ডা ব্রিলিয়ান্ট-এর তৈরি মহাত্মা গান্ধীর এই মূর্তিটি দীর্ঘদিন ধরে ভারত ও ব্রিটেনের সাংস্কৃতিক বন্ধনের প্রতীক। উল্লেখ্য, এই স্কোয়ারটি শান্তি উদ্যান হিসেবে পরিচিত এবং গান্ধী স্বয়ং এই পার্শ্ববর্তী ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনেই আইন নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। প্রতি বছর ২ অক্টোবর, গান্ধী জয়ন্তীতে এই মূর্তিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। তার ঠিক আগে এমন ঘটনায় ভারতীয় সম্প্রদায় গভীরভাবে আঘাত পেয়েছে।
সাম্প্রতিক অতীতেও লন্ডনে ভারতীয় লক্ষ্যবস্তু এবং প্রতীকগুলিকে কেন্দ্র করে বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং চরমপন্থী গোষ্ঠীর বিক্ষোভ ও উস্কানিমূলক কার্যকলাপ দেখা গেছে। কয়েক মাস আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রী এস জয়শঙ্করের লন্ডন সফরের সময়ও প্রোপাকিস্তানি এবং প্রো-খালিস্তানি বিক্ষোভকারীরা ভারত-বিরোধী স্লোগান দিয়েছিল। সেই সময়ও ভারত সরকার গণতন্ত্রের স্বাধীনতার এই অপব্যবহার'-এর নিন্দা জানিয়েছিল।
লন্ডনের শান্তি উদ্যানের এই ভাঙচুর কেবল একটি মূর্তির ক্ষতি নয় বরং অহিংসার বিশ্বব্যাপী আদর্শের প্রতি এক স্পষ্ট চ্যালেঞ্জ; যা অবিলম্বে কঠোর তদন্ত এবং উপযুক্ত পদক্ষেপ দাবি করছে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল