অজ্ঞাত ড্রোন আতঙ্কে নিজেদের আলবর্গ বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে ডেনমার্ক। দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় জুটল্যান্ড অঞ্চলে অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ এই বিমানবন্দর থেকে বাণিজ্যিক উড়োজাহাজের পাশাপাশি সামরিক উড়োজাহাজও পরিচালিত হয়।
এর কয়েকদিন আগেই কোপেনহেগেন বিমানবন্দর একই ধরনের ড্রোন দেখা যাওয়ায় চার ঘণ্টা বন্ধ ছিল।
ডেনিশ পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার স্থানীয় সময় রাত ৯টা ৪৪ মিনিটের দিকে আলবর্গ বিমানবন্দরের আকাশে একাধিক ড্রোন দেখা যায় এবং কয়েক ঘণ্টা ধরে সেগুলো টহল দেয়। ড্রোনগুলোর আলো জ্বালানো ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
ইউরোকন্ট্রোল জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোর ৪টা (জিএমটি) পর্যন্ত আলবর্গ বিমানবন্দরে সব ধরনের আগমন ও প্রস্থান বন্ধ রাখা হবে। পরে সকালে পুলিশ জানায়, ড্রোনগুলো আলবর্গ আকাশসীমা খুলে দেয়। তবে একই সময়ে এসবিয়ার্গ, সোন্ডারবর্গ ও স্ক্রিডস্ট্রুপ শহরের বিমানবন্দর ঘিরেও ড্রোন দেখা গেছে। স্ক্রিডস্ট্রুপ ঘাঁটিই হলো ডেনমার্কের এফ-১৬ ও এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানগুলোর প্রধান ঘাঁটি।
পুলিশ বলছে, এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি ড্রোনগুলোর ধরন বা এগুলো কোপেনহেগেনে দেখা যাওয়া ড্রোনগুলোর মতো কি না। তবে প্রাথমিক তদন্তে এটিকে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর ওপর বড় ধরনের হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ডেনিশ সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা পুলিশকে তদন্তে সহায়তা করছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করতে রাজি হয়নি তারা। পুলিশের এক মুখপাত্র বলেছেন, “ড্রোনগুলোর উদ্দেশ্য কী এবং এর পেছনে কে আছে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে সম্ভব হলে সেগুলো নামিয়ে ফেলার চেষ্টা করা হবে।”
এর পেছনে রাশিয়া থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন ডেনিশ প্রধানমন্ত্রী ম্যাতে ফ্রেদেরিকসেন।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন সতর্ক করে বলেছেন, “আমাদের সীমান্তে ধারাবাহিকভাবে হুমকির আলামত দেখা যাচ্ছে। আমাদের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ঝুঁকিতে রয়েছে। ইউরোপ এ ধরনের হুমকির জবাব শক্তি ও দৃঢ়তার সঙ্গে দেবে।”
রাশিয়ার ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ অবশ্য এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলেছেন। তার দাবি, রাশিয়ার বিমান সবসময় আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে পরিচালিত হয়, তাই কোনওভাবেই আকাশসীমা লঙ্ঘন করে না।
ডেনমার্কের পাশাপাশি নরওয়েও ড্রোন শনাক্ত হওয়ার কারণে সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানী অসলো বিমানবন্দরের আকাশসীমা তিন ঘণ্টা বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়। এর আগে এ মাসের শুরুতে পোল্যান্ড রাশিয়ার ড্রোন অনুপ্রবেশের পর ওয়ারশসহ চারটি বিমানবন্দর বন্ধ রেখেছিল। ঘটনার পর ন্যাটো মিত্ররা সীমান্ত প্রতিরক্ষা জোরদারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং নতুন করে তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। সূত্র: আল-জাজিরা
বিডি প্রতিদিন/একেএ