গাজা সিটির জেইতুন ও সাবরা এলাকায় ইসরায়েলি সেনাদের নতুন অভিযানের কারণে শহরটি ছেড়ে পালাচ্ছেন হাজার হাজার ফিলিস্তিনি। তারা গাজা সিটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে পালিয়ে যাচ্ছেন।
টানা বোমা ও গোলা বর্ষণের পর বুধবার ইসরায়েলি বাহিনী গাজা সিটির উপকণ্ঠে অবস্থান নিয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, পূর্ণাঙ্গ হামলা হলে তা অনিবার্যভাবে আরও মৃত্যু ও ধ্বংস ডেকে আনবে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজের অনুমোদনের পর সেনারা ইতোমধ্যেই জেইতুন ও জাবালিয়া এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে। এ অভিযানে প্রায় ৬০ হাজার রিজার্ভ সেনাকে আগামী সেপ্টেম্বরের শুরুতে ডাকা হচ্ছে বলে জানা গেছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি গাজার শেষ সন্ত্রাসী ঘাঁটি দখলের সময়সীমা সংক্ষিপ্ত করছেন।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ইসরায়েলের পরিকল্পনাকে দুই জাতির জন্যই বিপর্যয়কর বলে মন্তব্য করেছেন। আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি (আইসিআরসি) সতর্ক করেছে, আরও বাস্তুচ্যুতি ও সহিংসতা গাজার ২১ লাখ মানুষের জন্য পরিস্থিতি ভয়াবহ করে তুলবে।
হামাস নিয়ন্ত্রিত সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, বুধবারের ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২৫ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে শিশু ও নারীও রয়েছেন। শাতি শরণার্থী শিবিরে এক পরিবারের পাঁচজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ইসরায়েলি সেনারা দাবি করেছে, তারা বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। তবে আইসিআরসি বলেছে, মানুষ এখন সম্পূর্ণভাবে ক্লান্ত। তাদের দরকার যুদ্ধবিরতি, খাদ্য, পানি ও আশ্রয়।
বর্তমানে হামাসের হাতে ৫০ জন জিম্মি রয়েছেন, যাদের মধ্যে অন্তত ২০ জন জীবিত আছেন বলে ইসরায়েল বিশ্বাস করে। পরিবারগুলো আশঙ্কা করছে, স্থল অভিযানে তারা আরও বিপদের মুখে পড়তে পারেন।
মধ্যস্থতাকারী কাতার ও মিশর একটি নতুন প্রস্তাব দিয়েছে, যাতে ৬০ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতি এবং অর্ধেক জিম্মি মুক্তির কথা বলা হয়েছে। হামাস প্রস্তাবটি গ্রহণ করলেও ইসরায়েল এখনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। নেতানিয়াহুর সরকার জানিয়েছে, তারা কেবল আংশিক নয় পূর্ণাঙ্গ চুক্তি চাই যেখানে সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে গাজায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৬২ হাজার ১২২ জন নিহত হয়েছেন।
সূত্র: বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল