ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ‘ডিইউ ফার্স্ট’ নামের একটি স্বতন্ত্র প্যানেল থেকে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রার্থী হয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে বহিষ্কৃত নেতা মাহিন সরকার। তার এ প্রার্থিতা ঘোষণার পরই তাকে ‘গুরুতর শৃঙ্খলাভঙ্গের’ অভিযোগে দল থেকে বহিষ্কার করে এনসিপি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, এনসিপির এই অবস্থানে আমি হতাশ হয়েছি। আমি ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের একজন যোদ্ধা হিসেবে তাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সংগ্রাম করেছি, তাই তাদের প্রতি আমার আস্থা ছিল যে তারা আমার বিষয়টিকে ভালোভাবে বিবেচনা করবে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, আমি অনেকাংশে হতাশ হয়েছি এবং বৈষম্যের শিকার হয়েছি। পার্টির কিছু বিষয় আমাকে কষ্ট দিয়েছে।
তিনি বলেন, গত ৫ আগস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্যদের একাংশ কক্সবাজারে বেড়াতে যায়, যার ফলে নেটিজেনরা বিরূপ মন্তব্য করেন এবং পার্টির সম্মান খুব একটা বাড়েনি। এই সদস্যদের শোকজ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তারা সরাসরি উত্তর না দিয়ে ফেসবুকে পোস্টের মাধ্যমে দায়মুক্তি নিয়ে নেন, যা মানুষ ভালোভাবে নেয়নি। আমার ক্ষেত্রে আমাকে কোনো শোকজ দেওয়া হয়নি, আমাকে পার্টির পক্ষ থেকে ডাকাও হয়নি। উল্টো, কোনো অগ্রিম ইঙ্গিত ছাড়াই আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
মাহিন সরকার বলেন, আমি মনে করি, পার্টিতে এমন একটি শ্রেণি আছে যারা যত অপরাধই করুক না কেন, তাদের শাস্তি হয় না, কিন্তু আমার ক্ষেত্রে সেটি হয়েছে। আমার প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ করা হয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে আমার সঙ্গে যা করা হয়েছে, তা অনেকাংশেই অন্যায়। আমাকে বহিষ্কার করার ফলে আমার মান-সম্মানের অনেক ক্ষতি হয়েছে এবং আমার শুভাকাঙ্ক্ষীরা কষ্ট পেয়েছেন।
ডাকসু নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি ডাকসুতে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলাম। আমার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করার সুযোগ ছিল, পার্টি আমাকে সেই সুযোগটি আর দিল না। আমি পার্টির সঙ্গে কথা বলেছিলাম যে আমি ডাকসু নির্বাচন করতে চাই। তারা আমাকে তাদের সমর্থিত একটি প্যানেলে একটি পদের নাম বলেছিল যেখানে আমি চাইলে নির্বাচন করতে পারি। আমি তাদের প্রশ্ন করেছিলাম যে যদি আমি এই পার্টিতে থেকেই তাদের সমর্থিত প্যানেলে নির্বাচন করি, তাহলে আমি বাইরে গিয়ে কেন করতে পারব না, যেহেতু আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন চলমান শিক্ষার্থী এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে কাজ করার অধিকার আমার আছে। এটি একটি জটিলতা সৃষ্টি করেছে। আমাকে একটি ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ’ বা এ ধরনের প্যানেলে যেতে বলা হয়েছিল। আমি যদি সেই প্যানেল থেকে নির্বাচন করি, তাহলে কোনো সমস্যা নেই, কিন্তু অন্য প্যানেল থেকে করলে সমস্যা— এ বিষয়টি আমার কাছে অনেকটা প্যারাডক্সের মতো মনে হয়েছে।
এই মুহূর্তে তার দ্বিতীয় কোনো অপশন নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি এখন পুরোপুরি ডাকসুতেই ফোকাস করছি। যদিও অনেকেই বলছেন যে এনসিপি (জাতীয় নাগরিক পার্টি) আমার প্যানেলকে সমর্থন দিচ্ছে, তবে এ বিষয়ে আমার কোনো ব্যক্তিগত মন্তব্য নেই, কারণ আমি স্বতন্ত্র প্যানেল থেকে নির্বাচন করছি এবং নিজের কাজে ফোকাস করছি।
বিডি প্রতিদিন/কেএ