গাজা নগরী দখলের লক্ষ্যে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বুধবার থেকে প্রাথমিক অভিযান শুরু করেছে বলে জানিয়েছে তেল আবিব। ইতোমধ্যেই নগরীর উপকণ্ঠে তাদের অবস্থান শক্ত হয়েছে বলে দাবি করেছে সেনা কর্তৃপক্ষ।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাট্জের অনুমোদনের পর এ অভিযানকে নিরাপত্তা মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। প্রথম পর্যায়ে প্রায় ৬০ হাজার রিজার্ভ সেনাকে ডাকা হয়েছে। যাতে সক্রিয় বাহিনীকে গাজায় নামানো যায়।
ইসরায়েলি সেনা মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডেফ্রিন জানান, গত ২২ মাসের যুদ্ধে হামাস বিধ্বস্ত এবং গাজা নগরী হামাসের অন্যতম ঘাঁটি। তিনি বলেন, আমরা হামাসের ভূ-উপরি ও ভূগর্ভস্থ সন্ত্রাসী অবকাঠামো ধ্বংস করব এবং জনগণের ওপর হামাসের নির্ভরশীলতা ছিন্ন করব।
বর্তমানে জেইতুন ও জাবালিয়া এলাকায় ইসরায়েলি ব্রিগেড মোতায়েন রয়েছে। ইতোমধ্যেই একটি ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গ ও অস্ত্রভাণ্ডার উদ্ধার করার দাবি করেছে আইডিএফ।
অভিযান শুরুর আগে গাজা নগরীর বাসিন্দাদের দক্ষিণাঞ্চলে আশ্রয় নিতে সতর্ক করা হচ্ছে। তবে হামাস-নিয়ন্ত্রিত সিভিল ডিফেন্স সংস্থা বলছে, জেইতুন ও সাবরা এলাকায় পরিস্থিতি অসহনীয় হয়ে উঠেছে।
গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, বুধবার একদিনেই অন্তত ২৫ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে শিশুসহ একটি পুরো পরিবারও রয়েছে।
এদিকে আন্তর্জাতিক মহল ইসরায়েলের এ পরিকল্পনার তীব্র সমালোচনা করেছে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সতর্ক করে বলেছেন, এ পদক্ষেপ দুই জাতির জন্যই বিপর্যয় ডেকে আনবে এবং গোটা অঞ্চলকে স্থায়ী যুদ্ধের ফাঁদে ফেলতে পারে।
আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি এক বিবৃতিতে জানায়, আরও বাস্তুচ্যুতি ও যুদ্ধ বৃদ্ধি গাজার ২১ লাখ মানুষের জন্য বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি করবে। সংস্থাটি তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছে।
মধ্যস্থতাকারী কাতার ও মিশর নতুন একটি ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে, যেখানে অর্ধেক জিম্মি মুক্তির বিষয় অন্তর্ভুক্ত। হামাস এ প্রস্তাবে সম্মতি দিলেও ইসরায়েল এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে সাড়া দেয়নি।
সূত্র: বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল