জুলাই জাতীয় সনদের চূড়ান্ত খসড়া প্রস্তাবের ওপর জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে লিখিত মতামত জমা দিয়েছে বিএনপিসহ চারটি রাজনৈতিক দল। দলগুলো হচ্ছে- বিএনপি, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি), খেলাফত মজলিস ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এনডিএফ)।
দলগুলো কয়েকটি বিষয়ে মতামত ও পুনর্বিবেচনার প্রস্তাব করেছে। একই সঙ্গে জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। জুলাই সনদ নিয়ে দলীয় মতামত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে জমা দেওয়ার বিষয়টি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বিষয়টি জানিয়েছেন।
জুলাই সনদের মতামত জমাদানের সময় ২২ আগস্ট বিকাল ৩টা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। গতকাল বিকাল ৪টায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া প্রথম পর্যায়ের নির্ধারিত সময় শেষ হয়েছে। মতামত জমা দেওয়ার জন্য সময় চেয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোটভুক্ত দলগুলো। দলগুলোকে মতামত জমা দেওয়ার জন্য সময় দিতে কমিশনের আপত্তি নেই বলে জানা গেছে। মতামত পাওয়ার পর তা নিয়ে আবারও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসবে কমিশন। যার ভিত্তিতে জুলাই সনদ স্বাক্ষরের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা, জুলাই জাতীয় সনদ জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রণীত হবে, স্বাক্ষরিত হবে এবং বাস্তবায়িত হবে। তবে অঙ্গীকারনামায় যে প্রস্তাবগুলো রাখা হয়েছে তার মধ্যে রাজনৈতিক সমঝোতার এ দলিলকে সংবিধানের ওপরে রাখা এবং কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না ইত্যাদি বিষয় গ্রহণযোগ্য নয়। অবশ্য আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে যে কোনো আইনি বৈধ এবং সাংবিধানিক প্রক্রিয়া খুঁজে বের করা যাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’ এবি পার্টি জানায়, পূর্ণাঙ্গ সমন্বিত খসড়া (সংশোধিত) প্রস্তাবের অনুচ্ছেদ ২১-এ এক কক্ষের আইনসভা নিয়ে প্রাথমিক অবস্থান পরিবর্তন করে দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট আইনসভা ব্যবস্থার পক্ষে মত দিয়েছে। তবে উচ্চকক্ষে সংখ্যানুপাতিক (পিআর) নির্বাচনের পদ্ধতি প্রয়োগ না হলে নিম্নকক্ষে প্রাথমিকভাবে ১০০ আসনে এই পদ্ধতি চালু করা যেতে পারে। প্রধান বিচারপতির নিয়োগ সংক্রান্ত অনুচ্ছেদ ৩০(৩)-এ পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’-এর চূড়ান্ত খসড়া গত ১৬ আগস্ট রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠায় ঐকমত্য কমিশন। খসড়ায় রাষ্ট্রের সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন বিষয়ে যেসব সংস্কারে ঐকমত্য ও নোট অব ডিসেন্টসহ সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেগুলো তুলে ধরা হয়েছে। এতে একটি পটভূমি, সংস্কার কমিশনসমূহ গঠন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন ও এর কার্যকলাপের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি, ঐকমত্যে উপনীত হওয়া বিষয়সমূহ এবং জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আট দফা অঙ্গীকারনামা রয়েছে।