ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ছাত্রসংগঠন-সমর্থিত প্যানেল বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) ভরাডুবি নিয়ে আলোচনা হয়েছে দলটির সাংগঠনিক নীতিনির্ধারণী সভায়। শুক্রবার রাত ৮টা থেকে শুরু করে মধ্যরাত পর্যন্ত চলা এনসিপির নির্বাহী কাউন্সিলের সভায় নেতাদের কেউ কেউ গণ অভ্যুত্থানের পর প্রথম ডাকসু নির্বাচনে এমন পরাজয়ে হতাশা প্রকাশ করেন। তবে ভুল শুধরে এগিয়ে যাওয়ার দিকে মনোযোগ দিতে বলেন জ্যেষ্ঠ নেতারা। রাজধানীর বাংলামোটরের রূপায়ণ টাওয়ারের দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভার এজেন্ডা ছিল জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা এবং গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সংবিধান প্রণয়নের দাবি। তবে ঘুরেফিরে ডাকসু নির্বাচনে পরাজয়ের প্রসঙ্গ আসে। কেন্দ্রীয় সংসদে একজনও জিততে না পারার পেছনে বিভিন্ন কারণ তুলে ধরেন নেতারা।
সূত্র জানায়, জুলাই সনদ বাস্তবায়নপদ্ধতি নিয়ে কথা বলেন নেতারা। রাজনৈতিক দলগুলো এ প্রসঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি। গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন চায় এনসিপি। সংবিধান-সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলো আগামী জাতীয় সংসদ গঠনের দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের পক্ষে বিএনপি; আগামী নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রপতির বিশেষ আদেশ বা গণভোটের মাধ্যমে বাস্তবায়নের পক্ষে জামায়াতে ইসলামী। তবে গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সংবিধান প্রণয়নের কর্মসূচিতে এনসিপির অনড় অবস্থান নিয়ে ভিন্নমত জানান কয়েকজন নেতা।
তাঁরা বলেন, দুই-চার বছরের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে গণপরিষদের দাবি নিয়ে এগোনো যায়। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এখন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতি মনোযোগ দেওয়া যেতে পারে।
সভায় দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা ও নাহিদা সারওয়ার নিভা, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদসহ নির্বাহী কাউন্সিলের ৪০ জনের বেশি নেতা উপস্থিত ছিলেন। তবে যুগপৎ আন্দোলন বা জোটে যাচ্ছে না এনসিপি। চার দাবিতে আট দলের যুগপৎ কর্মসূচির যে সংবাদ হয়েছে তা মিস লিডিং বলে জানিয়েছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও রাজনৈতিক লিয়াজোঁ প্রধান আরিফুল ইসলাম আদীব। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি বলেন, এনসিপি জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সংবিধানের যে দাবি সেটির সঙ্গে অপরাপর রাজনৈতিক দলগুলোর অনানুষ্ঠানিক আলোচনা করেছে। কিন্তু পূর্ণ সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের বিষয় এনসিপির কোনো অবস্থান নেই। বরং এনসিপি শুধু উচ্চকক্ষে পিআর বিষয়ে একমত। এ ছাড়া সন্ত্রাসী ও ফ্যাসিবাদের সহযোগী হিসেবে জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিতের দাবির সঙ্গে এনসিপির সমর্থন থাকবে।