যুক্তরাজ্যের লন্ডনে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপর হামলার চেষ্টা করেছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। দেশটির রাজধানী শহর লন্ডনে ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের স্কুল অব আফ্রিকান অ্যান্ড ওরিয়েন্টাল স্টাডিজ (সোয়াস) ক্যাম্পাসে আয়োজিত একটি সেমিনার থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় এ হামলা চেষ্টার ঘটনা ঘটে। লন্ডনের কেন্দ্রস্থলের ব্লুমসবারি এলাকায় সোয়াস ক্যাম্পাসে ওই সেমিনারটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যৌথভাবে আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ হাইকমিশন। লন্ডনের স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় সোয়াস ক্যাম্পাসের পেছনের রাস্তা দিয়ে হাইকমিশনের গাড়ি বের হলে গাড়ির ওপর ডিম নিক্ষেপ করেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় হাইকমিশনের কালো রঙের বিএমডব্লিউ গাড়ির সামনে শুয়ে পড়ার চেষ্টা করেন তাদের কয়েকজন। কিন্তু পুলিশের হস্তক্ষেপে তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হলেও তারা গাড়ির ওপর ডিম নিক্ষেপ করেন। তবে ওই গাড়ির ভিতরে মাহফুজ আলম ছিলেন না বলে দাবি করেছে লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশন। হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার আকবর হোসেন জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের কর্মীরা এ গাড়িতে মাহফুজ আলম আছেন মনে করে ডিম ছুড়লেও তিনি অন্য রাস্তায় অন্য গাড়িতে করে সোয়াস ক্যাম্পাসে ত্যাগ করেছেন।
সরকার ও উপদেষ্টা পরিষদের ভিতরেও মাহফুজ আলমকে অপদস্থ ও হত্যার মৌন সম্মতি- নাহিদ ইসলাম : তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে লন্ডনে অপদস্থ করার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন। ওই পোস্টে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে লেখেন, ‘সরকার ও উপদেষ্টা পরিষদের ভিতরেও মাহফুজ আলমকে অপদস্থ ও হত্যার মৌন সম্মতি তৈরি করা হয়েছে।’
রাজনৈতিকভাবে এর জবাব দেওয়া হবে- এমনটি উল্লেখ করে ওই পোস্টে তিনি আরও লেখেন, ‘এ সরকার ও উপদেষ্টারা মাহফুজদের যথেচ্ছা ব্যবহার করে এখন মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। আমরা এগুলো মনে রাখছি। রাজনৈতিকভাবে এর জবাব দেওয়া হবে।’
নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া পোস্টের শুরুতে নাহিদ ইসলাম উল্লেখ করেন, ‘গণ অভ্যুত্থানের অন্যতম কেন্দ্রীয় চরিত্র ও অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপর লন্ডনে হামলার চেষ্টা হয়েছে। এর আগে আমেরিকায় হামলা ও অপদস্থ করার চেষ্টা করা হয়েছে। বারবার মাহফুজ আলমের ওপর আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের হামলা, কারণ মাহফুজ আলমই টার্গেট। পরবর্তী ধাপে আমরা প্রত্যেকেই টার্গেট হব। আমরা জানি আমাদের জন্য কী অপেক্ষা করে আছে। গোপালগঞ্জে ফ্যাসিস্টদের নৃশংসতা আমরা দেখে আসছি।’ এরপর নাহিদ ইসলাম লেখেন, ‘মাহফুজ আলমের ওপর হামলার মৌন সম্মতি যারা তৈরি করছে তারাও ভুগবে। ফ্যাসিবাদ বিভাজনের রাজনীতি করে। মাহফুজ আলম গণ অভ্যুত্থানের পরে অন্তর্ভুক্তি এবং দায় ও দরদের রাজনীতির কথা বলছে। কিন্তু বাংলাদেশ সেই পথে হাঁটেনি।’
আমরা দেখতে পাচ্ছি ফ্যাসিবাদবিরোধিতার নাম করে প্রতিক্রিয়াশীল ও প্রতিশোধের রাজনীতি শুরু করছে বিভিন্ন গ্রুপ যা অবশ্যম্ভাবীভাবে ফ্যাসিবাদকে ফিরিয়ে আনবে।’ পোস্টে এনসিপির আহ্বায়ক আরও উল্লেখ করেন, সময় প্রমাণ করবে মাহফুজ আলমই সঠিক ছিল, যদি ততদিন উনি বেঁচে থাকার সুযোগ পান।’