ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় বেসামরিক নাগরিক ও ত্রাণকর্মীদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে ইসরায়েল। মৃত্যুর মিছিল এখন ৬২ হাজার ছাড়িয়েছে। ইসরায়েলি ত্রাণসহ বিভিন্ন সহায়তা অবরোধের মধ্যে দুর্ভিক্ষে মৃত্যুর সংখ্যা পৌঁছেছে ২৬৩ জনে, যার মধ্যে রয়েছে ১১২ জন শিশু। সোমবার বার্তা সংস্থা আনাদোলু এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৬০ জন গাজাবাসী নিহত এবং ৩৪৪ জন আহত হয়েছেন গত ২৪ ঘণ্টায়। এ নিয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চালানো গণহত্যায় কমপক্ষে ৬২ হাজার চার জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ সময়ে মোট আহতের সংখ্যা ১ লাখ ৫৬ হাজার ২৩০ জন।
মন্ত্রণালয় অনাহার ও অপুষ্টিজনিত কারণে নতুন পাঁচজনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দুই শিশুও। এ নিয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে দুর্ভিক্ষজনিত মৃত্যুর সংখ্যা ২৬৩ জনে দাঁড়িয়েছে, যার মধ্যে ১১২ জন শিশু।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজায় মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধার প্রচেষ্টা। অনেক ভুক্তভোগী এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা রয়েছেন। একইসঙ্গে জরুরি দলগুলো নিরলস ইসরায়েলি বোমাবর্ষণের কারণে এবং তাদের নিজস্ব সরঞ্জামের অভাবে ভুক্তভোগীদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ২৭ মে থেকে ইসরায়েলি বাহিনী জরুরি খাদ্য ও সরবরাহ পৌঁছানোর চেষ্টা করার সময় ১ হাজার ৯৬৫ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। আহত করেছে ১৪ হাজার ৭০১ জন ফিলিস্তিনিকে।
এদিকে, ইসরায়েলের ডি-ফ্যাক্টো রাজধানী তেল আবিবের ‘জিম্মি স্কোয়ার’ ও আশেপাশের রাস্তায় অন্তত ৫ লাখ মানুষ সমবেত হয়েছে।সমাবেশে তারা ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় হামাসের কাছে থাকা জিম্মিদের মুক্তি এবং যুদ্ধ বন্ধের জন্য এক সমন্বিত চুক্তির দাবি জানিয়েছে।
ইসরায়েলজুড়ে গত শনিবার দিনব্যাপী ধর্মঘট ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়। সাধারণ জনগণ ও বিরোধীরা অংশ নেন। সমাবেশের একদিন পর তেল আবিবে এই বৃহৎ সমবেত অনুষ্ঠিত হয়। জিম্মি ও নিখোঁজ পরিবারের ফোরাম এই সমাবেশের আয়োজন করে। এদিন দেশজুড়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ রাখা হয়। এসময় জিম্মি পরিবারের সদস্যরা মঞ্চে বক্তব্য দেন। জিম্মি ওফির ব্রাসলভস্কি, রম ব্রাসলভস্কির পিতা বলেন, “দুই সপ্তাহ আগে আমরা রম জীবিত আছে বলে ইঙ্গিত পেয়েছি। রম ক্ষুধার্ত, নির্যাতিত এবং ভীত। এই যুদ্ধ থামাতে হবে, উপেক্ষা বন্ধ করতে হবে।” সমাবেশ শেষে ফোরাম ঘোষণা করে, ‘ইসরায়েল অন হোল্ড’ কার্যক্রম শেষ হয়েছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে শতশত কর্মসূচিতে এক মিলিয়নেরও বেশি মানুষ অংশগ্রহণ করেছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম